নতুন বিয়ের পর বেশিরভাগ স্বামী স্ত্রীর জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ সম্পর্কে খুব বেশি জ্ঞান থাকে না, এটাই স্বাভাবিক। অনেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে থাকেন তবে বেশিরভাগ নতুন দম্পতি ডাক্তারের কাছেও যায় না এবং পরামর্শ গ্রহণ করে না।
এতে কিন্তু কিছু কিছু মহিলার ক্ষেত্রে মারাত্মক শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়। আপনি জানেন কি! সব মহিলার শরীরের সাথে জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ মানাসই হতে পারে না অর্থাৎ, সবার শরীর টলারেট করতে পারে না।
অন্যান্য ওষুধের মতো জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধেরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না।
জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ শুধুমাত্র জন্ম নিয়ন্ত্রন করার জন্য ব্যবহার হয় না। জন্ম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এই ওষুধ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
যেমন- ব্রণ সমস্যা, অনিয়মিত ঋতুস্রাব, পলিসিস্টিক অভারি সিনড্রোম, মহিলাদের মাসিকের সময় যন্ত্রণা বেশি হলে অনেক সময় ডাক্তাররা জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তবে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবনে মহিলাদের মস্তিস্কে মারাত্মক প্রভাব পরতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন গবেষক ডাঃ লিপটন বলেন, জন্ম নিয়ন্ত্রক বড়ি সেবনের ফলে মহিলাদের মস্তিস্কের গঠন কাঠামোর উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং মস্তিস্কের কর্মক্ষমতার উপর মারাত্মকভাবে প্রভাব বিস্তার করে।
ডাঃ লিপটন বলেন, এ জাতীয় ওষুধের উপর আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। এ সমস্ত ওষুধের ব্যবপারে স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট এ অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
চলুন জেনে নেই জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধের অজানা কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
১. দীর্ঘদিন জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবন করলে মহিলাদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর প্রধান কারণ হলো জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ হরমোনের মাধ্যমে কাজ করে থাকে।
তাই এ সকল ওষুধ দীর্ঘদিন ধরে সেবন করলে বিলম্বিত ঋতুস্রাব কিংবা অনিয়মিত ঋতুস্রাব দেখা দিতে পারে।
২. অনেক মহিলা জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবন করলে বমি বমি ভাব অনুভব করে থাকেন, আবার কারো কারো বমিও হয়ে থাকে।
পাশাপাশি দেখা দিতে পারে মুড সুইং, বাড়তে পারে স্তনের স্পর্শকাতরতা, অনেক সময় স্তনের ব্যাথ্যাও হতে পারে, দীর্ঘদিন সেবনের ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
পড়ে নিন, সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণ
৩. জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ মহিলাদের মস্তিস্কে মারাত্মক প্রভাব ফেলে, এই তথ্যটি নর্থ অ্যামেরিকার এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
উক্ত গবেষণায় মোট ৫০ জন নারীর উপর গবেষণা চালিয়েছেন গবেষকরা। ৫০ জন মহিলার মধ্যে ২১ জন মহিলা নিয়মিত জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ গ্রহণ করতেন।
তাদের সবার মস্তিস্ক স্ক্যান করে গবেষকরা লক্ষ্য করেন যারা জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ গ্রহণ করতেন তাদের মস্তিস্কে মারাত্মক পরিবর্তন হয়েছে।
গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন উভয় মহিলাদের মাঝে হাইথ্যালামাসের ঘনত্বের উল্লেখযোগ্য তারতম্য রয়েছে। হাইথ্যালামাস হলো ঘুমচক্র, যৌন ক্ষমতা, খাওয়ার রুচি, মেজাজ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণের মূল জায়গা, অর্থাৎ কেন্দ্রবিন্দু।
নতুন আরও একটি গবেষণায় গবেষকরা জানতে পারেন যে, অতিরিক্ত মাত্রায় জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবন করলে মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়।
যেহেতু জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ মহিলাদের শরীরের হরমোনের উপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে তাই বর্তমানে চিকিৎসকরা অতিরিক্ত মাত্রায় জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবন করতে নিষেধ করে থাকেন।
এ ধরনের ওষুধে যদি ইস্ট্রোজেন এর পরিমাণ কম থাকে তবে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যাবে, গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন গবেষকরা।
তাই সমস্যা যাই হোক না কেন সকল ওষুধ বিশেষজ্ঞ ডাক্টারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিৎ।
আরও পড়ুন,
*লেখাটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন*