যত দিন যাচ্ছে করোনার ভয়ঙ্কর রূপ আমাদের সামনে প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। প্রাণহানী এবং আক্রান্তও বেড়েই চলেছে। যেহেতু করোনার কোন ওষুধ কিংবা ভ্যাক্সিন এখনো আবিষ্কার হয়নি তাই সচেতনতাই একমাত্র ওষুধ।
একটু পরপর সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ মিনিট ধরে হাত ধোয়া, যখন তখন চোখে মুখে নাকে হাত না দেয়া, মাস্ক ব্যবহার করা, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করা ইত্যাদি।
কিন্তু অনেক সময় আমাদের বাইরে বের হতে হয়, তখন হাত ধোয়ার জন্য সাবান বা পানি পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে আমরা ব্যবহার করতে পারি হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
করোনা প্রকট আকার ধারণ করার সাথে সাথে বাজার থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উধাও হয়ে গেছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চাহিদা বহুগুণে বেড়ে যাওয়া।
আর ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট তো আছেই। এই সিন্ডিকেটের কারণে এসব পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। যা মধ্যবিত্তদের জন্য অনেক কষ্টের কারণ।
তাহলে উপায়? উপায় আছে, নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করে খুব সহজে বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন হ্যান্ড স্যানিটাইজার। আসুন জেনে নেই কিভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করা যায়?
সুচীপত্র
হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানোর পদ্ধতি
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন দুটি পদ্ধতির কথা বলেছেন। আসুন জেনে নেই কি সেই পদ্ধতি।
১. গ্লিসারিনের হ্যান্ড স্যানিটাইজার
গ্লিসারিনের হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করতে কয়েকটি উপকরন প্রয়োজন হয়।
উপকরনসমুহ
-
-
- আইসোপ্রপাইল অ্যালকোহল
- হাইড্রোজেন পার অক্সাইড
- গ্লিসারল বা গ্লিসারিন
- বিশুদ্ধ পানি
- এসেন্সিয়াল অয়েল বা গন্ধসার তেল
-
বানানোর পদ্ধতি
সরাসরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানোর পূর্বে কোন ক্যামিকেল কি পরিমাণে লাগবে সেটি জানা জরুরী।
-
-
- ১/৩ কাপ পরিমাণ আইসোপ্রপাইল অ্যালকোহল
- ১ চা চামচ হাইড্রোজেন পার অক্সাইড
- সিকি চা চামচ গ্লিসারল বা গ্লিসারিন
- ১/২ টেবিল চামচ বিশুদ্ধ পানি
- ৮-১০ ফোঁটা এসেন্সিয়াল অয়েল বা গন্ধসার তেল
- উল্লেখিত পরিমাণ ক্যামিকেল এক সাথে নিয়ে ভালোভাবে মেশাতে হবে।
-
বিশুদ্ধ পানি কিভাবে পাবেন? বাজারে ডিস্টিল্ড ওয়াটার কিনতে পাওয়া যায় যদি কিনতে না পারেন তবে পানি ফুটিয়ে সে পানি ঠাণ্ডা করে ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার করা যাবে না।
ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে একটি বোতলে কিনবা স্প্রে যুক্ত টিউবে ভরে ব্যবহার করতে পারেন অনায়াসেই।
২. ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরার হ্যান্ড স্যানিটাইজার
ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরার হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করতে নিচের উপকরণগুলোর দরকার হবে।
উপকরণসমূহ
-
-
- আইসোপ্রপাইল অ্যালকোহল
- ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা জেল
- এসেন্সিয়াল অয়েল বা গন্ধসার তেল
-
বানানোর পদ্ধতি
প্রথমে অ্যালোভেরা পাতা থেকে আঠালো রস বের করে নিতে হবে। পাত্রে যে পরিমাণ অ্যালোভেরা রস নিবেন ঠিক তার দ্বিগুণ পরিমাণে আইসোপ্রপাইল অ্যালকোহল নিতে হবে।
এর সাথে এসেন্সিয়াল অয়েল বা গন্ধসার তেল ৮ থেকে ১০ ফোঁটা ব্যবহার করতে পারেন। আপনি চাইলে এসেন্সিয়াল অয়েল বা গন্ধসার তেল ব্যবহার নাও করতে পারেন।
খুব ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে তৈরি হয়ে যাবে আপনার কাঙ্ক্ষিত অ্যালোভেরা হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এরপর একটি সুবিধাজনক পাত্রে রেখে ব্যবহার করতে পারেন আপনার প্রয়োজনমত।
রাসায়নিক দ্রব্য কিভাবে সংগ্রহ করবেন?
হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানোর পদ্ধতি তো আমরা শিখলাম। এখন সবচেয়ে বড় বিষয় এই সকল রাসায়নিক দ্রব্য কোথায় পাবো বা কোথা থেকে সংগ্রহ করবো?
১. বাংলাদেশে অনেক কোম্পানি আছে যারা এসব রাসায়নিক তৈরি করে থাকে কিংবা আমদানি করে থাকে। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
২. আপনাদের আশেপাশে অনেক স্কুল কলেজ আছে। সেসব স্কুল বা কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তাদের ল্যাবরেটরি থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
৩. অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা ক্যামিক্যাল নিয়ে কাজ করে। আপনি চাইলে তাদের সাহায্য নিয়ে প্রয়োজনীয় ক্যামিকেল সংগ্রহ করতে পারেন।
সতর্কতা
যেহেতু এগুলো সব রাসায়নিক দ্রব্য তাই অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, এতে অধিক পরিমাণে এবং অধিক ঘনত্বের অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয়। এসব দ্রব্য সরাসরি চোখে লাগলে সাথে সাথে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
যেহেতু রাসায়নিক দ্রব্য তাই, ঘরের ভিতরে এর ব্যবহার না করে শুধুমাত্র ঘরের বাইরে ব্যবহার করা উচিৎ। আর ঘরের জন্য তো সাবান আছেই।
অধিক মাত্রায় জ্বলনশীল হওয়ার কারণে এগুলোকে আগুনের সংস্পর্শে আনা যাবে না। এমনকি ব্যবহারের পরপরই আগুনের কাছে যাওয়া যাবে না।
সীমিত পরিসরে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন, কারণ অধিক মাত্রায় ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা এসব হ্যান্ড স্যানিটাইজার বাড়িতে তৈরি করতে নিষেধ করে থাকেন। কারণ পরিমাণে এদিক সেদিক হলে অনেক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
রাসায়নিক উপাদানে ভেজাল থাকতে পারে। তাই বাড়িতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করতে চাইলে অধিক সতর্ক থাকতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি সাবান ব্যবহার করতে পারেন।
খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হবেন না। ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন এই কামনা। আজ এই পর্যন্ত, আগামীতে আবারও দেখা হবে নতুন কোন টপিকস নিয়ে। আল্লাহ হাফেজ। তথ্যসূত্রঃ গার্ডিয়ান, ডেইলি মেইল
আরও পড়ুন,
*লেখাটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন*
Wow that was strange. I just wrote an incredibly long comment but after I
clicked submit my comment didn’t appear. Grrrr…
well I’m not writing all that over again. Anyhow, just wanted
to say excellent blog!