প্রতিভা নিয়ে কেউ জন্ম নেয় না, তেমনি সৃজনশীলতা নিয়েও কেউ জন্ম নেয় না। এগুলো নিজেকেই তৈরি করে নিতে হয়। সৃজনশীলতা মূলত একটি অভিজ্ঞতা যা শুধুমাত্র পেশাগত জীবনে হয়ে থাকে।
সৃজনশীলতা আমার আপনার দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাশক্তি, অপরের সাথে সম্পর্ক, অনুশীলন, আগ্রহের পরিবর্তন ইত্যাদির সমষ্টি মাত্র। আসুন জেনে নেই নিজের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করার কার্যকরী কিছু উপায়।
সুচীপত্র
- কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীলতা বাড়ানোর কার্যকরী উপায়
- ১. সকালের নাস্তা পেট পুরে করুন
- ২. পরিচ্ছন্ন রাখুন কাজের টেবিল
- ৩. নিয়মিত বিরতিতে ই-মেইল পড়ুন
- ৪. কাজ করুন তালিকা অনুযায়ী
- ৫. কাজের ফাঁকে বিরতি নিন
- ৬. মুঠোফোন থেকে দূরে থাকুন
- ৭. মিটিং করুন ছোট ছোট
- ৮. এক কাজ একবারে করুন
- ৯. পর্যাপ্ত ঘুমান
- ১০. খারাপ লাগা কাজ করুন
- ১১. কাজের ফাঁকে গান শুনুন
- ১২. আড্ডা দিন
- ১৩. আপনার প্রিয় খাবার খান
- ১৪. কাজের পরিবেশ নিয়ে আসুন
- ১৫. আইডিয়া লিখে রাখুন
- ১৬. পড়াশুনা করুন নিয়মিত
- ১৭. গল্প করুন
- ১৮. কাজের সময় নির্ধারণ করুন
- ১৯. কাজের বিকল্প পদ্ধতি রাখুন
- ২০. প্রিয় কাজে অগ্রাধিকার দিন
- ২১. ঘুরতে যান
- ২২. অল্প সময়ে কাজ শেষ করর রাস্তা বের করুন
- ২৩. পরামর্শ নিন
- ২৪. আপনার নিজের কাজের মূল্যায়ন করুন
- ২৫. ম্যাগাজিন পড়ুন
- ২৬. ব্যর্থতার ভয় দূর করুন
- ২৭. ঝুঁকি নিয়ে কাজ করুন
- ২৮. জিজ্ঞাসা করুন
কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীলতা বাড়ানোর কার্যকরী উপায়
কর্মক্ষেত্রে আপনার সৃজনশীলতা নেই? আপনার বস আপনার কাজে সন্তুষ্ট নয়? তাহলে আর দেরী না করে মনোযোগসহকারে নিচের আর্টিকেলটি পড়ে ফেলুন।
১. সকালের নাস্তা পেট পুরে করুন
কি অবাক হলেন? অবাক তো হওয়ারই কথা। পড়তে আসলেন কিভাবে কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করা যায় আর এখানে পড়ছেন সকালের নাস্তা পেট পুরে করবেন নাকি করবেন না। সকালের নাস্তার উপরেই নির্ভর করে আপনার কাজের গতি।
বর্তমানে আমরা যারা নতুন পেশাজীবী আছি, অনেকেই সকালের নাস্তা না করেই তাড়াহুড়ো করে অফিসে যাই। এটি করা মোটেও উচিৎ না। সকালের নাস্তা বা খাবার খেতে হবে পেট পুরে।
এটি শুধু আপনার শরীরের উপরে প্রভাব ফেলবে না বরং তা দিনের প্রথম ভাগের কাজের উপরেও প্রভাব ফেলতে সক্ষম। মনে রাখবেন স্বাস্থ্যই সম্পদ। শরীর ভালো থাকলে আপনার মন ভালো থাকবে আর মন ভালো থাকলে আপনার কাজে আসবে নতুনত্ব আসবে সৃজনশীলতা।
২. পরিচ্ছন্ন রাখুন কাজের টেবিল
আপনি যেখানে বসে বা যে জায়গায় বসে কাজ করেন তা বাসায় হোক কিংবা অফিসে, সে জায়গাটা সবসময়ের জন্য পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন।
আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা কাজ দেখানোর প্রবণতা আছে, যার কারণে তারা তাদের কাজের টেবিলে কাগজ পত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে।
তারা মনে করে থাকে যে, অফিসের টেবিলে কাগজ পত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে না রাখলে হয়তো বস মনে করবে আমি কাজে ফাকি দিচ্ছি। কিন্তু আপনি জানেন কি! এ ধরণের কাজ আপনার কাজের সৃজনশীলতা বিকাশে বাধা প্রদান করতে পারে?
কাজের সৃজনশীলতা বিকাশে এবং কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরিতে পরিচ্ছন্ন টেবিল অনেক অর্থবহ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও গোছালো টেবিল আপনার মনের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৩. নিয়মিত বিরতিতে ই-মেইল পড়ুন
আমাদের কম বেশি সবারই একটি বদ অভ্যাস আছে, তা হলো আমরা ঘন ঘন কোন প্রকার বিরতি ছাড়াই ই-মেইল পড়ে থাকি। যখন তখন মোবাইল ফোন কিংবা ডেস্কটপে চোখ রাখি। এতে কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যায়। এক মনে কাজ করার উপর বাধা প্রদান করে।
দক্ষ কর্মীরা সাধারণত দিনের শুরুতে ই-মেইল পড়ে না। তারা গত দিনের কাজের চাপ কমিয়ে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে ধীরে সুস্থে মেইল পড়েন। সবচেয়ে বেশি সময় দেবেন আপনার কাজের মান বৃদ্ধি করার পিছনে। আর কাজের প্রয়োজনে আপনাকে ই-মেইল পড়া লাগতে পারে তবে সেটা করুন নিয়মিত বিরতিতে।
৪. কাজ করুন তালিকা অনুযায়ী
আজকে কোন কাজ করবো? আগামীকালকে কোন কাজ করবো? ঐ কাজটি কিভাবে করবো? কোন কাজটি আগে করবো? কোন কাজটি পরে করবো? এসব নিয়ে কম বেশি সবাই চিন্তায় থাকেন। ব্রেইনে অতিরিক্ত একটা চাপ অনুভব করে থাকেন। কিন্তু আসল কাজের কাজটি কেউ করেন না।
আজকে কোন কাজটি করবেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন। আগামীকাল কি কি কাজ করবেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কোন কাজটি আগে করবেন, এবং কোন কাজটি পরে করবেন? উত্তর খুব সহজ।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সবার আগে করবেন। মোট কথা আপনার কাজের তালিকাটি হতে হবে কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী। যেকোনো কাজ তালিকা অনুযায়ী করলে ব্রেইনের উপর চাপ কমে যায় এবং কাজে সৃজনশীলতা ও মনোযোগ বাড়ে।
৫. কাজের ফাঁকে বিরতি নিন
আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা একটানা অনেক্ষন ধরে কাজ করি। তাতে কাজ হয় কিন্তু কাজের মান ভালো হয় না। বিরতিহীন একটানা কাজ করলে ব্রেইনের উপর মারাত্মক ধরণের চাপ তৈরি হয়। আর চাপ নিয়ে কাজ করলে সেই কাজ মান সম্মত হয় না।
এমনকি কাজের মধ্যে অনেক ভুল থাকার সম্ভাবনা থাকে। তাই এক ঘণ্টা পর পর একটু করে বিরতি নিন। বিরতির সময় পানি পান করুন। এতে করে ব্রেইন ফ্রেশ থাকবে এবং কাজে মনোযোগ বাড়বে।
৬. মুঠোফোন থেকে দূরে থাকুন
আপনি কোন কাজ করছেন কিংবা কোন মিটিং করছেন? এই সময়টাতে আপনার মোবাইল ফোন আপনার থেকে দূরে রাখুন। বর্তমান যুগে আমরা কম বেশি সবাই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে থাকি আর ইন্টারনেট অন করা থাকলেই আসতে শুরু করে বিভিন্ন অ্যাপস এর নোটিফিকেশন যা আপনাকে আপনার কাজ থেকে সরিয়ে নিয়ে আসতে পারে। বিঘ্ন ঘটতে পারে আপনার মনোযোগে।
তাই কাজের সময় আপনার মোবাইল ফোন আপনার থেকে দূরে রাখুন এতে করে আপনার কাজে গতিশীলতা আসবে। শুধুমাত্র কাজের দরকারে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার অভ্যাস করুন।
৭. মিটিং করুন ছোট ছোট
গতিশীল এবং কার্যকর মিটিং করার কৌশল জেনে নিন। এ ব্যাপারে মানব সম্পদ বিভাগের সাহায্য নিতে পারেন। দীর্ঘ সময় ধরে মিটিং করবেন না। ছোট ছোট মিটিং করুন।
আপনার মিটিং এর টাইম হবে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ মিনিট। যা কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীলতা বিকাশে এবং কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।
৮. এক কাজ একবারে করুন
আমরা অনেকগুলো কাজ একবারে করার চেষ্টা করি। এতে করে কোন কাজই ভালোভাবে সমাপ্ত করা যায় না। কাজগুলো থেকে যায় অগোছালো। একটি কাজ করা শুরু করলে তা বাদ দিয়ে অন্য কাজে হাত দেয়া উচিৎ না।
যে কাজটি শুরু করেছেন সেটিতেই মনোযোগ দিন। একটি কাজ ভালোভাবে শেষ করার পর নতুন কাজ শুরু করুন। মনে রাখবেন একসাথে অনেকগুলো কাজ করলে আপানার কাজে গতিশীলতা থাকবে না এবং সৃজনশীলতার বিকাশও ঘটবে না।
৯. পর্যাপ্ত ঘুমান
একজন মানুষের পর্যাপ্ত ঘুম তার সারাদিনের সকল ক্লান্তি দূর করে দিতে পারে। একজন সুস্থ মানুষের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা নির্বিঘ্ন ঘুম প্রয়োজন। ঘুমের সময় ঘুমানো বাদ দিয়ে কোন প্রকার কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
আজকে আপনার পর্যাপ্ত ঘুম হলে আগামীকাল সারাদিন আপনার ব্রেইন থাকবে ফ্রেশ। যা আপনাকে কাজে মনযোগী করতে সাহায্য করবে।
১০. খারাপ লাগা কাজ করুন
প্রত্যেক মানুষই কিছু না কিছু কাজ করতে অপছন্দ করে থাকেন। অথবা কোন আগ্রহ কাজ করে না। অথচ সেই কাজটি গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের কাজের পিছনে প্রতিদিন অন্তত ১০-১৫ মিনিট সময় দিন।
এতে ধীরে ধীরে সে কাজের প্রতি আপনার ভালোবাসা তৈরি হয়ে যেতে পারে।
১১. কাজের ফাঁকে গান শুনুন
কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়াতে এবং কাজের গতি বাড়াতে মাইন্ড ফ্রেশ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আর আপনার মাইন্ডকে ফ্রেশ করার জন্য কাজের ফাঁকে ৫-১০ মিনিট গান শুনুন। এক্ষেত্রে কুরআন তিলাওয়াতও শুনতে পারেন।
১২. আড্ডা দিন
আপনার কাজের সৃজনশীলতা বাড়াতে হলে আপনাকে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে হবে। বন্ধুদের সাথে যখন আড্ডা দেবেন তখন তাদের সাথে মন খুলে কথা বলুন। কোন কিছু মনের ভিতরে চেপে রাখবেন না।
শুধু বন্ধুদের সাথে আড্ডা নয় বরং সব বয়সের মানুষের সাথে আড্ডা দিন, এতে অনেক নলেজ বাড়বে যা আপনার কাজের সৃজনশীলতা নিয়ে আসতে সহায়তা করবে।
১৩. আপনার প্রিয় খাবার খান
প্রত্যেক মানুষই নিদৃিষ্ট কিছু খাবার খেতে পছন্দ করে থাকেন। পছন্দের খাবার খেলে মন ফ্রেশ থাকে এবং কাজের প্রতি মনোযোগ বেড়ে যায় সাথে কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীলতাও বাড়তে পারে।
১৪. কাজের পরিবেশ নিয়ে আসুন
আপনার অফিসে যদি কাজের পরিবেশ না থাকে তবে অবশ্যই কাজের পরিবেশ নিয়ে আসতে হবে আপনাকেই। কাজের পরিবেশ না থাকলে আপনি কাজ করে মজা পাবেন না এবং কোন কাজে মনোযোগ দিতেও পারবেন না।
১৫. আইডিয়া লিখে রাখুন
প্রতিটি মানুষের মাথায় কিছু না কিছু আইডিয়ার জন্ম নেয়। এই আইডিয়াগুলকে আমরা অনেকেই গুরুত্ব দেই না। আপানার আইডিয়াগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।
সকাল বেলা আমাদের ব্রেইন অনেক ফ্রেশ থাকে আর এই সময়ে অনেক আইডিয়া মাথায় আসে। অন্তত ৫ মিনিট সময় নিয়ে আপনি আপনার আইডিয়াগুলো নোট করে রাখতে পারেন।
১৬. পড়াশুনা করুন নিয়মিত
পড়াশুনার কোন শেষ নাই। যত পড়বো ততই শিখবো। পড়ার কোন বয়স নেই, জানার কোন শেষ নেই। সাহিত্য, প্রবন্ধ, গল্প, ইতিহাস, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের বই পড়ুন। আর নিজের পেশা সম্পর্কিত বই পড়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
১৭. গল্প করুন
প্রাণ খুলে গল্প করুন আপনার বন্ধুদের সাথে, শুধু বন্ধুই নয় গল্প করুন আপনার থেকে বয়সে বড়দের সাথেও। বয়সে বড় লোকদের সাথে গল্প করলে তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
মনের ভিতরে কোন কিছু চেপে রাখবেন না কখনোই। কেননা কোন কিছু চেপে রাখা অভ্যাসটি আপনাকে ধীর গতির করে তুলবে।
১৮. কাজের সময় নির্ধারণ করুন
একটি কাজ করতে কত সময় নেবেন তা আগেই নির্ধারণ করে রাখুন। এবং নির্ধারিত সময়ের মধেই কাজটি সমাপ্ত করার জন্য চেষ্টা করুন। এতে আপনার কাজের ধীর গতির অবসান ঘটবে।
১৯. কাজের বিকল্প পদ্ধতি রাখুন
প্রতিটি কাজেরই কোন না কোন পদ্ধতি আছে। আপনি প্রতিটি কাজের একটি অথবা দুটি করে বিকল্প পদ্ধতি আবিষ্কার করুন। বিকল্প পদ্ধতিতে যেন সেই কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যায় সেদিকে নজর দিন।
২০. প্রিয় কাজে অগ্রাধিকার দিন
যে যে কাজ গুলো করতে আপনার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে সেই কাজ গুলো প্রথমে করুন। আবার ব্যক্তিগত কিছু কাজ থাকতে পারে যা করতে আপনি পছন্দ করেন।
অফিস বন্ধ থাকলে কিংবা ছুটি পেলে আপনার সেই প্রিয় কাজগুলো করে ফেলুন। ঐ সময়টাকে অন্য কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। অগ্রাধিকার দিন আপনার প্রিয় কাজে।
২১. ঘুরতে যান
একটানা কাজের মধ্যে থাকলে মেধার বিকাশ হয় না। ব্রেইন এ এক প্রকার মরিচা ধরে যায়। তাই অবসর সময়ে অথবা ছুটির দিনে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যান। এতে আপনার মন ভালো থাকবে।
২২. অল্প সময়ে কাজ শেষ করর রাস্তা বের করুন
কোন কাজ করতে যদি আপনার অনেক বেশী সময় লেগে যায় তবে শর্টকাট রাস্তা বের করে ফেলুন। যার দ্বারা আপনি অল্প সময়ে কাজটি করতে পারবেন।
২৩. পরামর্শ নিন
আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা কারো কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে চায় না। মনে করে অন্যের কাছে পরামর্শ চাইলে নিজে ছোট হয়ে যাবে। এমনটা কখনোই করবেন না।
কোনকিছুর পরামর্শের দরকার হলে লজ্জা না করে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে নিয়ে নিন। নতুন কোন বিষয়ের জন্য কারো কাছে পরামর্শ নেয়াটা দোষের কিছু না আর এতে লজ্জা পাওয়ারও কিছু নেই।
২৪. আপনার নিজের কাজের মূল্যায়ন করুন
আমারা অনেকেই অনেক কিছু করি, অনেক কিছুই ভাবি, অফিসের কাজে সময় দেই, বন্ধুদের সময় দেই, ফ্যামিলিকে সময় দেই, কিন্তু নিজেকে কখনো সময় দেই না। সৃজনশীলতা বিকাশে নিজেকে সময় দেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবার আগে নিজেকে মুল্যায়ন করতে হবে, নিজেকে মুল্যায়ন করা শিখতে হবে।
আমরা সবসময় উল্টোটা করে থাকি যা আমাদেরকে পিছিয়ে ফেলে দেয়, আমাদের প্রতিভাকে দমিয়ে রাখে। তাই নিজেকে সময় দিতে হবে এবং নিজেকে মূল্যায়ন করতে হবে তবেই সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটবে।
২৫. ম্যাগাজিন পড়ুন
অফিসে কিংবা বাসায় একটু আবসর পেলেই স্মার্ট ফোন নিয়ে যা ইচ্ছা তাই শুরু করে দেই। কেউ ফেসবুক কেউ আবার ইউটিউব। কিন্তু আপনি জানেন কি! স্ক্রীনের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা কতোটা বিপদজনক?
স্ক্রীনের আলো সরাসরি চোখে পড়ে এর কারণে আমাদের মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি হয়। ফলে আমাদের মাইন্ড ফ্রেশ থাকে না এবং সৃজনশীলতা বিকাশে বাধার সৃষ্টি করে। তাহলে অবসর সময়ে কি করবেন?
বাংলা কিংবা ইংলিশ ভাষার ম্যাগাজিন পড়ুন। ৫ থেকে ১০ মিনিট ম্যগাজিন পড়লে শরীর মন দুইটাই অনেকটা শান্ত হয়ে যায়। ছাপার অক্ষর পড়লে স্নায়ু শিথিল হয়ে যায়।
২৬. ব্যর্থতার ভয় দূর করুন
আমাদের লক্ষ্য পূরণের পথে মারাত্মক বাধা হয়ে দাড়ায় ব্যর্থতার ভয়। আমাদের মাঝে অনেকেই অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখে, অনেক বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা তাদের কাজ শুরুই করতে পারে না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে ব্যর্থ হওয়ার ভয়।
কাজ শুরু করার আগে অনেকেই মনে করে থাকেন আমার তো টাকা নেই, আমার তো মেধা নেই, ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব মনোভাব কাজ শুরু করতে বাধা প্রদান করে থাকে। এসব চিন্তা বাদ দিয়ে কাজ শুরু করে দিন কারণ ব্যর্থ হওয়ার চিন্তাটাই আপনি ব্যর্থ হওয়ার আগেই আপনাকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে।
২৭. ঝুঁকি নিয়ে কাজ করুন
সৃজনশীলতা বিকাশের ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার মানসিকতা তৈরি করুন। অনেক সময় ঝুঁকি আর ঝুঁকি থাকে না। এই ঝুঁকি আপনাকে আমাকে সফলতাও এনে দিতে পারে।
কোন কাজে ঝুঁকি নিলে সেটাতে সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা দুটাই আসতে পারে। মনে রাখা জরুরী, কোন কাজে সফলতার প্রধান সিঁড়ি হতে পারে এই ঝুঁকি।
২৮. জিজ্ঞাসা করুন
আমাদের মাঝে অনেক লোক আছে যারা কারো কাছে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করতে লজ্জাবোধ করেন। এমনটা করা মোটেও উচিৎ না। আপনি একটি বিষয় বুঝছেন না, আবার কারো কাছ থেকে জেনেও নিচ্ছেন না, ব্যাপারটা কেমন হয়ে গেল না!
যদি আপনি কারো কাছ থেকে জেনে নেন তবে আপনি নতুন একটি জিনিস জানতে পারলেন। জানার কোন শেষ নেই। আপনি যত বেশি জিজ্ঞাসা করবেন ঠিক ততো বেশি নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আপনার সৃজনশীলতা বিকাশে জিজ্ঞাসার বিকল্প হতেই পারে না। সফল হতে হলে লজ্জা ভুলে গিয়ে বেশি বেশি জিজ্ঞাসা করুন।
উপরের কথাগুলোকে গুরুত্বসহকারে মেনে চললে কর্মক্ষেত্রে আপনার কাজের সৃজনশীলতা আসবেই এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই আর দেরি না করে আজ থেকেই শুরু করে দিন।
আরও পড়ুন,
*নিচের বাটনে ক্লিক করে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন*