Download Free FREE High-quality Joomla! Designs • Premium Joomla 3 Templates BIGtheme.net
Home » বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি » ল্যাপটপ ভালো রাখার সহজ উপায়

ল্যাপটপ ভালো রাখার সহজ উপায়

স্ক্রিনটা চারকোণা, বলা চলে চতুর্ভুজ আকৃতির, একটি সাজানো গোছানো অ্যাডজাস্ট কীবোর্ড, মাউস নেই কিন্তু তার বদলে রয়েছে টাচপ্যাড।

শুধু কি তাই! ব্যাগের মধ্যে খুব সহজেই বহন করা যায় আস্ত একটা কম্পিউটার। হ্যাঁ তাই, এখানে আসলে কম্পিউটারের কথাই বলা হচ্ছে, কিন্তু নামটা ল্যাপটপ।

এক সময় মানুষ ডেক্সটপ ব্যবহার করতো কিন্তু বর্তমানে ডেক্সটপের জায়গাটা দখল করে নিয়েছে এই ল্যাপটপ।

কিছুদিন পূর্বেই মানুষজন ল্যাপটপকে বিলাশিতা মনে করলেও এখন এটি ব্যবহার করে প্রয়োজনে। আস্ত একটি কম্পিউটার ব্যাগে করে অনায়াসে বহন করা যায় বলে বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে।

ল্যাপটপের পাশাপাশি বর্তমানে মানুষ ক্রোমবুক, আল্ট্রাবুক, নোটবুক, অল-ইন-ওয়ান ইত্যাদি ব্যবহার করছে।

ল্যাপটপ ভালো রাখার উপায় বা ল্যাপটপ নিরাপদ রাখার উপায় নিয়ে জানার পূর্বে জেনে নেয়া যাক ল্যাপটপ কি? এবং ল্যাপটপ কত প্রকার?

ল্যাপটপ ভালো রাখার সহজ উপায় , How to keep laptop properly

সুচীপত্র

ল্যাপটপ কি?

ল্যাপটপ শব্দটি দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। একটি হচ্ছে ল্যাপ যার অর্থ হচ্ছে কোল এবং অপরটি হচ্ছে টপ যার অর্থ হচ্ছে উপর। তাহলে ল্যাপটপের অর্থ দাঁড়ায় কোলের উপর।

একটি কম্পিউটারকে কোলের উপর বসিয়ে চালন যায় এমন ধরনের কম্পিউটারকে মূলত ল্যাপটপ বলা হয়ে থাকে।

কিন্তু আসল কথা হচ্ছে এসব পুড়নো কথা, নতুন কথা হচ্ছে আস্ত একটা কম্পিউটারকে ব্যাগ থেকে বের করে ইচ্ছে মত কাজ করা যায় এটাকেই বলা হচ্ছে ল্যাপটপ।

ল্যাপটপ কত প্রকার?

বিভিন্ন ধরনের স্মার্ট ফোনের মতই বাজারে বিভিন্ন ধরনের ল্যাপটপ কিনতে পাওয়া যায়। যেমন-

১. অল-ইন-ওয়ান ল্যাপটপ

২. নোটবুক

৩. আল্ট্রাবুক 

এবার আসুন জেনে নেয়া যাক, উপরোক্ত তিন প্রকার ল্যাপটপের পরিচয়।

১. অল-ইন-ওয়ান ল্যাপটপ

অল-ইন-ওয়ান ল্যাপটপ আবিষ্কার হয় মূলত ট্যাবলেট উদ্ভাবনের পরপরেই। অল-ইন-ওয়ান ল্যাপটপ এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর পুরো স্ক্রিনটাই টাচ অর্থাৎ টাচ স্ক্রিন।

এই প্রকার ল্যাপটপের আরও একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর পর্দা মূল মেশিন থকে আলাদা করে ইচ্ছে মত কাজ করা যায়। এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে বলা হয়ে থাকে কনভার্টিবল উইথ টাচ স্ক্রিন।

দেখতে বেশ আকর্ষণীয় এবং স্টাইলিশ হওয়ায় বর্তমান যুগের তরুণ প্রজন্মের কাছে দিনে দিনে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

উদাহরণ দিতে গেলে এইচপির স্পেক্টরের কথা না বললেই নয়। এছাড়াও মাইক্রোসফটের সারফেস, এবং লেনোভোর ইয়োগা তো আছেই।

আরও পড়ুন,

২. নোটবুক

ল্যাপটপের সব থেকে পুরনো সংস্করণের নামটাই হচ্ছে মূলত নোটবুক। সে সময়ে অফিসের কাজ থেকে শুরু করে ক্লাস, মুভি দেখা, কিংবা গেইম ইত্যাদির জন্য এর বিকল্প অন্যকিছু ছিলই না বলা যেতে পারে।

নোটবুক যখন সর্বপ্রথম বাজারে আসে তখন এটি ল্যাপটপ নামে পরিচিতি লাভ করে। একটা সময় আকারে ছোট হতে থাকলে নামটা পরিবর্তন হয়ে নোটবুক নামে পরিচিতি পায়।

ঠিক ঐ সময় থেকে ল্যাপটপকে মানুষজন নোটবুক নামে ডাকা শুরু করে। রাশিয়াতে এখনো মানুষ ল্যাপটপকে নোটবুক নামে সম্বোধন করে থাকে।

৩. আল্ট্রাবুক

আল্ট্রাবুককে ল্যাপটপের এক বিপ্লবের নাম হিসেবে ধরে নেয়া হয়। গঠনের দিক থেকে বেশ পাতলা রকমের, ওজনও অনেক কম।

কিন্তু তাতে কি হয়েছে, একটি সাধারন কম্পিউটারের সাথে সমানে সমান টক্কর দিতে সক্ষম এই আল্ট্রাবুক। ওজন অনেক কম হওয়ায় ইউজাররা খুব সহজেই এটি বহন করতে পারেন।

আল্ট্রাবুক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, লেনোভো, ডেল, এইচপি, আসুস ইত্যাদি।

সাধারণ ল্যাপটপগুলোর তুলনায় আল্ট্রাবুক পাতলা, ওজনে কম এবং ছোট হওয়ার কারণে এর দামটা একটু বেশি। একটি মানসম্মত আল্ট্রাবুকের দাম প্রায় ৬০০০০ টাকা থেকে শুরু করে দের লাখ কিংবা দুই লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ল্যাপটপ কোথায় পাওয়া যায়?

এতক্ষণ আপনারা জানলেন ল্যাপটপ এবং ল্যাপটপের প্রকারভেদ সম্পর্কে বেসিক কিছু ধারণা। আসুন এবার জেনে নিই, এসব ল্যাপটপ বাংলাদেশের কোথায় পাওয়া যায়।

আমরা অনেকেই হয়তো আইডিভি ভবনের নাম শুনেছি। এটি ঢাকার আগারগাওতে অবস্থিত। এটাকে বিসিএস কম্পিউটার সিটি নামে মানুষ চেনে।

ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে রয়েছে মাল্টিপ্লান সেন্টার এখানেও পাওয়া যায় হরেক রকমের কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ।

সারা দেশের মধ্যে এই দুটি স্থান হচ্ছে কম্পিউটার কেনার জন্য সব থেকে জনপ্রিয়। শতশত দোকান শো রুম দিয়ে পরিপূর্ণ এই মার্কেট দুটি।

অসংখ্য দোকান এবং শো রুমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রায়ান্স কম্পিউটার, স্টারটেক, কম্পিউটার সোর্স, কম্পিউটার ভিলেজ ইত্যাদি। ল্যাপটপের বর্তমান দাম সরাসরি জেনে নিতে পারবেন অনলাইন মার্কেটপ্লেস বিডিস্টল.কম থেকে। 

আবার প্রতি বছর বসে কম্পিউটার মেলা। এই মেলায় পাওয়া যায় নতুন নতুন কম্পিউটার ল্যাপটপ এবং সাথে থাকে নানা ধরনের আকর্ষণীয় পুরষ্কার। 

ল্যাপটপ চালানোর নিয়ম

আপনি হয়তো ভাবছেন, জানতে চাইলাম ল্যাপটপ ভালো রাখার উপায় বা নিরাপদে ল্যাপটপ চালানোর উপায় কি? আর এখানে এসে দেখছি ল্যাপটপ চালানোর নিয়ম!

আসলে বিষয়টা তেমন নয়। আপনি যদি ভালোভাবে ল্যাপটপ চালাতে না জানেন তবে আপনার ল্যাপটপ বেশিদিন টিকবে না এটাই সত্য কথা।

তাই ল্যাপটপ ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জানার পূর্বে আপনার অবশ্যই ল্যাপটপ চালানোর নিয়ম সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান রাখা আবশ্যক।

ল্যাপটপ কিভাবে চালালে বেশিদিন ব্যবহার করতে পারবেন? কিভাবে যত্ন নিলে ল্যাপটপ তারাতারি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে এসব জেনে রাখা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

আসুন তাহলে জেনে নিই, ল্যাপটপ চালানোর সঠিক নিয়মগুলো কি কি?

আরও পড়ুন,

১. ল্যাপটপ রাখার নিরাপদ স্থান

আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা বিছানায় বা বালিশের উপর ল্যাপটপ রেখে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন।

কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে বিছানা কিংবা বালিশের উপর ল্যাপটপ রেখে কাজ করলে ল্যাপটপের হায়াত কমে যায়।

এর কারণ হচ্ছে, ল্যাপটপের নিচে দুটি ফ্যান থাকে, এ দুটি ফ্যান বাহির থেকে বাতাস গ্রহণ করে ল্যাপটপের ভেতরে নিয়ে যায়।

একবার ভাবুন তো, বিছানা বা বালিশের উপর ল্যাপটপ রেখে কাজ করলে বাতাস ভেতরে যেতে পারবে কি না? উত্তর আসবে অবশ্যই না।

তাহলে উপায়? উপায় তো আছেই, ল্যাপটপ রাখার উপযুক্ত জায়গা বা স্থান হচ্ছে টেবিল বা কোল। বিছানার উপরেও ব্যবহার করা যেতে পারে যদি ল্যাপটপের নিচে কোন কিছু দেয়া যায়। যেমন বই বা শক্ত জাতীয় কোন কিছু। তবে মাথায় রাখতে হবে যে, বাতাস ভেতরে নিয়ে যাওয়ার কাজটি ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা।

২. ল্যাপটপের ব্যাটারি এবং চার্জিং

ল্যাপটপ ঠিকঠাক রাখার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে হলে ল্যাপটপের ব্যাটারি নিয়ে কথা না বললেই নয়। এ কথা জেনে রাখা ভালো যে, একটি ভালো মানের ল্যাপটপের ব্যাটারি প্রায় ১৩ থেকে ১৫ ঘণ্টা ব্যাকআপ দিতে পারে।

ভালো মানের ল্যাপটপ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলেও ব্যাটারির চার্জের কোন সমস্যা সাধারণত হয় না। অনেকেই দুশ্চিন্তায় থাকেন, ল্যাপটপ কখন চার্জ দেব, কিভাবে দেব কতক্ষণ দেব?

ল্যাপটপ চার্জ দেয়া নিয়ে অনেক ভুল তথ্য আমরা মাঝে মাঝে শুনি। যেমন, সারা রাত ধরে ল্যাপটপ চার্জ দিলে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায় ওভারচার্জ এর কারণে।

কিন্তু আমরা একথা জানিনা যে, সারারাত সারাদিন ল্যাপটপ চার্জে লাগিয়ে রাখলেও ব্যাটারির কোন প্রকার সমস্যা না। ব্যাটারির চার্জ ফুল হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাটারি চার্জ নেয়া বন্ধ করে দেয়।

ভালো মানের ল্যাপটপগুলোতে এই ফিচার রয়েছে, অর্থাৎ ব্যাটারি ওভারচার্জ হয় না। যদি সারারাত চার্জে লাগিয়েও রাখা হয় তবুও ব্যাটারির কোন প্রকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

এ কথা সত্যি যে, বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে। তাই সারারাত ধরে ল্যাপটপ চার্জ দেয়া থেকে বিরত থাকা যেতে পারে।

৩. কীবোর্ড

আমাদের মাঝে অনেক মানুষ আছে যারা স্পেস বাটন এবং এন্টার বাটনকে অনেক বেশি পছন্দ করে থাকেন। অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে কীভাবে?

ধরুন কেউ টাইপিং এর কাজ শেষ করে যখন এন্টার বাটন প্রেস করার সময় আসে তখন সে খুব জোরে সোরে প্রেস করে থাকেন।

আবার কেউ কেউ এন্টার বাটনের পাশাপাশি স্পেস বাটনকেও আদর করে জোরে সোরে প্রেস করে থাকেন।

এই সজোরে আঘাত করা আপনার ল্যাপটপের ক্ষতি নিয়ে আসতে পারে। ল্যাপটপের বাটনগুলো যত্নসহকারে ব্যবহার করলে বাটনগুলো ভালো থাকবে এতে করে ল্যাপটপ সুরক্ষিত থাকবে। যদিও ল্যাপটপের কীবোর্ড অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন,

৪.  টাচপ্যাড

ল্যাপটপের টাচপ্যাড অনেক বেশি সংবেদনশীল একটি পার্ট যা খুব সাবধানতার সাথে ব্যবহার করতে হয়। কারণ ল্যাপটপের টাচপ্যাডের নিয়ে হাজার হাজার মোশন সেন্সর থাকে।

তাই একটি অথবা দুটি আংগুল দিয়ে টাচপ্যাড ব্যবহার করা অধিকতর শ্রেয়। এতে টাচপ্যাডের কোন প্রকার সমস্যা হবে না ফলে আপনার ল্যাপটপটি অনেকদিন পর্যন্ত টিকে থাকবে।

ল্যাপটপের টাচপ্যাড নিয়ে আর একটি কথা না বললেই নয়, তা হল- টাচপ্যাডে অতিরিক্ত প্রেসার দিয়ে যেন কাজ করা না হয়। কারণ হাজারো মোশন সেন্সর রয়েছে এর নিচে।

৫. ল্যাপটপ চালু করা এবং বন্ধ করা

ল্যাপটপ ভালো রাখার উপায়গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম উপায় হচ্ছে ল্যাপটপ অন অফ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখা।

অনেকেই হয়তো ধারণা করছেন ল্যাপটপ অন অফ করা কোন ব্যাপার হল! এটা তো চোখ বন্ধ করেই করা যায়। না, ব্যাপারটা আসলে তা নয়।

অ্যামেরিকার একটি গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, প্রায় ২৫ থেকে ২৭ শতাংস মানুষ সঠিকভাবে ল্যাপটপ অন কিংবা অফ করতে জানেন না।

আর এই কারণে ল্যাপটপ বেশিদিন টিকে না। অর্থাৎ সঠিকভাবে অন অফ না করলে ল্যাপটপের আয়ু দ্রুত কমে যেতে শুরু করে।

আমাদের মাঝে অনেকেই ল্যাপটপে কাজ করে ভাজ করে বিছানায় বা টেবিলে কিংবা বালিশের নিচে রেখে দেই।

এ কথা আমরা অনেকেই জানি না যে, ল্যাপটপ ভাজ করে রাখলে তা বন্ধ হয়ে যায় না। ব্যাটারির চার্জ রক্ষা করার জন্য স্লিপ মুডে চলে যায়।

এই স্লিপ মুড কিছু সময়ের জন্য করা যেতে পারে চার্জ রক্ষা করার জন্য এবং কাজের সুবিধার জন্য। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে স্লিপ মুডে না রেখে অফ করে রাখাই ভালো।

ল্যাপটপ বন্ধ করার সময় অনেকেই পাওয়ার বাটন প্রেস করে বন্ধ করে। এই কাজটি ল্যাপটপের জন্য মোটেও ভালো নয়। প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে কি করতে হবে?

ল্যাপটপ হোক কিংবা কম্পিউটার অফ করার ক্ষেত্রে সবসময়ই স্টার্ট মেনু থেকে পাওয়ার অপশনে গিয়ে শাট ডাউন প্রেস করে বন্ধ করতে হবে।

ল্যাপটপ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

বর্তমান যুগে আমরা কম বেশি সবাই একটু আদটু ল্যাপটপ ব্যবহার করতে জানি এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। তবে আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা ল্যাপটপ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানি না।

ল্যাপটপ ভালো রাখার জন্য এবং ল্যাপটপের আয়ুষ্কাল বাড়াতে ইউজারদের অবশ্যই ল্যাপটপ ব্যবাহারের কিছু বিধি নিষেধ মানতে হবে।

এ পর্যায়ে আমরা জানতে পারব ল্যাপটপ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম অর্থাৎ ল্যাপটপ ব্যবহারের বিধিনিষেধ যা আমাদের ল্যাপটপকে ভালো রাখতে সহায়তা করবে।

জেনে নিন, জিমেইলের ব্যবহার 

১. খাবার এবং পানি ল্যাপটপ থেকে দূরে রাখা

শুকনো খাবার কিংবা ভেজা খাবার যেটাই হোক না কেন তা ল্যাপটপ থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখতে হবে। কারণ, খাদ্যদ্রব্য কীবোর্ডের ভিতরে খুব সহজে ঢুকে যেতে পারে।

আর এতেই বাধবে বিপত্তি অর্থাৎ ল্যাপটপের কীবোর্ড এর বাটন কাজ করা বন্ধ করে দেবে। তারপর দৌড়াতে হবে সার্ভিসিং সেন্টারে।

এ কথা সবসময়ই মাথায় রাখা জরুরী যে, ল্যাপটপের জম হচ্ছে পানি। তাই ল্যাপটপ ভালো রাখার জন্য ল্যাপটপ থেকে পানি যথাসম্ভব দূরে রাখতে হবে।

যদি কোনভাবে ল্যাপটপের ভেতরে পানি ঢুকে যায় তবে সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। তারপর ল্যাপটপটিকে উচু স্থানে খাঁড়া করে রাখতে হবে প্রায় ২০ থেকে ৩০ ঘণ্টা।

হাতের নাগালে সার্ভিসিং সেন্টার থাকলে যত দ্রুত সম্ভব তাদের কাছেও নিয়ে যেতে পারেন। এভাবে করে ল্যাপটপ ঠিকঠাক রাখা সম্ভব।

২. হাত তেল মুক্ত রাখা

ল্যাপটপ ভালো রাখার উপায় গুলোর মধ্যে একটি উপায় হচ্ছে ল্যাপটপ ব্যবহারের পূর্বে হাত পরিষ্কার রাখা। কারণ, টাচপ্যাড খুব সহজেই নষ্ট করে দিতে পারে তেল।

পানি কিংবা ঘামও টাচপ্যাডকে নষ্ট করে দিতে পারে। তাই যাদের হাত বেশি বেশি ঘামে তাদের একটু পরপর টিস্যু বা রুমাল দিয়ে হাত মুছে ফেলা উচিৎ।

৩. আঘাত থেকে সতর্ক থাকা

ধরুন আপনি আপনার ল্যাপটপে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার ফুটবল ম্যাচ দেখছেন। ৯০ খেলা দেখার পর আপনার পছন্দের আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিল হেরে গেল। আবেগে আপ্লূত হয়ে ল্যাপটপের গায়ে সজোরে একটা থাপ্পর মারলেন।

একবারও আপনার মাথায় আসেনি খেলার হার জিতে যন্ত্রের কোন হাত নেই। অথব আপনি আপনার প্রিয় ল্যাপটপটিকেই আঘাত করলেন।

মনে রাখা দরকার একটু আঘাতেই কিন্তু আপনার ল্যাপটপের স্ক্রিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা টাচপ্যাড নষ্ট হয়ে যেতে পারে। শুধু কি তাই! আঘাতটা একটু বেশি হলেই গোটা ল্যাপটপটিই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

তাই ল্যাপটপ ভালো রাখার জন্য ল্যাপটপের গায়ে যেন কোন প্রকার আঘাত না লাগে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা আবশ্যক।

৪. ল্যাপটপ ক্যারিয়ার ব্যবহার করা

সহজে বহন করা যায় বলে ল্যাপটপ এত বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই বহন করার ব্যাগটি যদি ঠিকঠাক না থাকে তবে কেমন হবে?

ল্যাপটপের বাহিরের অংশে ছোট আঘাত থেকে শুরু করে বড় ধরনের আঘাতও লাগতে পারে। পাশাপাশি চাপও পড়তে পারে। এতে ল্যাপটপের ক্ষতি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

তাই ল্যাপটপ ভালো রাখার জন্য বা ল্যাপটপ ঠিকঠাক রাখার জন্য ভালো মানের ল্যাপটপ ক্যারিয়ার ব্যবহার করা প্রয়োজন।

জেনে নিন,

৫. ল্যাপটপের উপরে ভারী কিছু না রাখা

আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা ল্যাপটপের উপরে বই কিংবা ভারী কোন কিছু হুটহাট করে রেখে দেই। কিন্তু ল্যাপটপ ঠিকঠাক রাখার জন্য আপনাকে এই কাজটি কোন ক্রমেই করা যাবে না।

ল্যাপটপের উপরে ভারী বস্তু রাখলে তা ল্যাপটপের স্ক্রিনের জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে এমনকি ল্যাপটপের স্ক্রিন একেবারেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ল্যাপটপের উপরে ভারী বস্তু রাখার ফলে ল্যাপটপ অন না হওয়া সমস্যা দেখা দিতে পারে, পাশাপাশি ল্যাপটপের স্ক্রিনে ফাটল দাগও দেখা দিতে পারে।

তাই উচিৎ এটাই হবে যে ল্যাপটপ ভালো রাখার জন্য এর উপরে ভারী কিছু না রাখা।

৬. জেনুইন অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা

ল্যাপটপ ভালো রাখার উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে আপডেট ভার্সনের জেনুইন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা। যদিও জেনুইন অপারেটিং সিস্টেমের দাম একটু বেশি তবুও নিরাপত্তার খাতিরে এটা আবশ্যক।

জেনুইন অপারেটিং সিস্টেম শুধুমাত্র ল্যাপটপের জন্য বিষয়টা এমনও নয়। আপডেট অপারেটিং সিস্টেম ম্যাক কিংবা ডেক্সটপেও ব্যবহার করা আবশ্যক।

ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার ব্যবহারকারীর মধ্যে একটা বিশেষ হুমকি হচ্ছে ভাইরাস। এমন অনেক ভাইরাস আছে যা আপনার কম্পিউটারে থাকা সমস্ত ফাইল নিমিষেই নষ্ট করে দিতে পারে।

সাথে কম্পিউটার হ্যাক করার ক্ষেত্রেও হ্যাকাররা বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে। এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে ভালো মানের একটি অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা অতি জরুরী।

জেনে নিন, এসইও কাকে বলে?

৭. অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে ফেলা

অনেক সময় দেখা যায় ল্যাপটপ অনেক স্লো কাজ করছে। এর একটি বিশেষ কারণ হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেমে অপ্রয়োজনীয় ফাইল জমে যাওয়া। ল্যাপটপ ভালো এবং গতি ঠিক রাখার জন্য এসব অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলো মুছে ফেলতে হবে।

অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে ফেলার জন্য আপনাকে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। সর্বপ্রথম স্টার্ট মেন্যুতে গিয়ে Run ওপেন করতে হবে। এখানে একটি সার্চ বক্স দেখা যাবে। সেখানে recent টাইপ করে ওকে বাটনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে অনেকগুলো অপ্রয়োজনীয় ফাইল চলে আসবে। এই ফাইলগুলোকে সিলেক্ট করে ডিলিট করে দিতে হবে।

একই জায়গায় temp, %temp%, prefetch ইত্যাদি একটি একটি করে টাইপ করে ওকে বাটন প্রেস করার মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় ফাইল চলে আসবে এবং সবগুলোকে সিলেক্ট করে ডিলিট করে দিতে হবে।

৮. অপরিবর্তনযোগ্য যন্ত্রাংশের ওভারব্লক না করা

প্রায় সব ধরণের ল্যাপটপের কিছু যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা যায় না। যেমন র‍্যাম, প্রসেসর গ্রাফিক্স কার্ড ইত্যাদি। তবে কিছু কিছু ল্যাপটপ আছে যেগুলোর এসব যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা যায়।

ল্যাপটপ ঠিকঠাক রাখার জন্য আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যেন, গ্রাফিক্স কার্ড,  র‍্যাম, প্রসেসর যেন কোনভাবেই ওভারব্লক না করা হয়।

৯. ল্যাপটপ অন না হলে কি করা উচিৎ?

ল্যাপটপ অন না হলে সর্বপ্রথম যে কাজটি করা উচিৎ তা হল, বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। তারপর ল্যাপটপের ব্যাটারি খুলে ১-২ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে।

কিছু কিছু ল্যাপটপ আছে যেগুলোর পাওয়ার বাটন ৩-৪ সেকেন্ড এর মত চেপে ধরে থাকলে রিসেট নেয়। ল্যাপটপ রিসেট দেয়ার পূর্বে মাথায় রাখা জরুরী যে প্রয়োজনীয় ফাইল ঠিক জায়গায় আছে কি না।

যদি মনে হয় আপনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সঠিক জায়গায় রাখা নেই তাহলে ল্যাপটপ রিসেট দেয়া উচিৎ না, এতে আপনার গুরুত্বপূর্ণ ফাইলটি নষ্ট হয়ে যাবে।

আর একটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরী, যদি ল্যাপটপের ব্যাটারি বেশি সময় ধরে চার্জশূন্য থাকে তবে অনেক সময় ল্যাপটপ বুট নেয় না। ব্যাটারি চার্জ দিলে তখন বুট নেবে।

১০. ল্যাপটপের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ

ল্যাপটপ চালানো অবস্থায় যদি এর তাপমাত্রা বেশি মনে হয় অর্থাৎ ৬০ থেকে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হয়ে গেলে বা কাছাকাছি চলে গেলে ল্যাপটপ ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে।

অতিরিক্ত তাপমাত্রায় যদি ল্যাপটপ চালানো হয় তবে ল্যাপটপের সার্কিট পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বিস্তারিত জেনে নিন,

১১. সার্ভিসিং করানো

ল্যাপটপ ভালো রাখার জন্য প্রতি বছর অন্তত একবার সার্ভিসিং করানো উচিৎ। এতে করে ল্যাপটপ অনেক বছর চালানো সম্ভব হবে।

কম্পিউটার বলুন কিংবা ল্যাপটপ ঠিকঠাক রাখার জন্য আপনাকে উপরের নিয়মগুলো মেনে চলা প্রয়োজন। তাহলে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ভালো থাকবে এবং অনেক বছর ব্যবহার করতে পারবেন।

Check Also

ওয়াইফাই রাউটার কেনার পূর্বে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা দরকার, Things to consider when buying wifi router.

ওয়াইফাই রাউটার কেনার পূর্বে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা দরকার

বাসা বাড়ি, মার্কেট কিংবা অফিস সব জায়গায় এখন ওয়াইফাই রাউটারের ব্যবহার। তার বিহীন ইন্টারনেট এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!