Download Free FREE High-quality Joomla! Designs • Premium Joomla 3 Templates BIGtheme.net
Home » হেলথ ও ফিটনেস » ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যেসব খাবার নিষিদ্ধ

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যেসব খাবার নিষিদ্ধ

ডায়াবেটিস শব্দটির সাথে পরিচয় নেই এমন মানুষ বর্তমানে খুঁজে পাওয়া কঠিন। ডায়াবেটিস এর বাংলা নাম হচ্ছে বহুমুত্র রোগ, কিছুদিন আগে এই রোগটিকে বংশগত রোগ বলে গণ্য করা হতো।

কিন্তু মানুষের অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে যেকোনো মানুষের হতে পারে ডায়াবেটিস। একবার ডায়াবেটিস হয়ে গেলে সারা জীবন তাকে এর যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়।

এই রোগটি কখনো নিরাময় হয় না তবে নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন এবং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এনে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিছু খাবার খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, আবার কিছু খাবার আছে যেগুলো ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিষের মতো।

যেসব খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়া উচিৎ নয়,  সে খাবারগুলো সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত জানবো।

Food to avoid with Diabetes | ডায়াবেটিস রুগীদের জন্য নিষিদ্ধ খাবার

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবারের তালিকা

যেসকল খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ এবং নিষিদ্ধ হওয়ার কারণসহ আরও অনেক তথ্য নিয়ে এই টপিকটি লেখা হয়েছে। পুরো লেখাটি পড়লে আশাকরি অনেক উপকার পাবেন।

১. চর্বিযুক্ত মাংস

চর্বি ছাড়া মাংস খেতে আসলেই ভালো লাগে না। চর্বির আলাদা একটা টেস্ট আছে। আমরা অনেকেই বেছে বেছে চর্বি খেয়ে থাকি। কিন্তু এই চর্বি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মারাত্মক বিষের মতো।

যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। আর চর্বিযুক্ত মাংসে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেক বেশি।

সুস্থ মানুষের জন্য ভালো খাবার হলেও চর্বিযুক্ত মাংস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এক প্রকার বিষ। তাই তাদের খাদ্যতালিকা হতে রেড মিট বা চর্বিযুক্ত মাংস বাদ দেয়া জরুরী।

২. ক্যান্ডি

ছোট বড় কম বেশি সবাই ক্যান্ডি খেতে পছন্দ করি। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানে না ক্যান্ডি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।

কারণ, ক্যান্ডিতে অত্যন্ত নিম্নমানের শর্করা থাকে এবং অতি উচ্চ মাত্রায় সুগার থাকে যা রক্তে চিনি বা সুগারের পরিমাণ মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং শরীরের ওজোন বৃদ্ধিতে যথেষ্ট সহায়তা করে।

তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ক্যান্ডি খাওয়া থেকে বিরত থাকা অনেক জরুরী।

৩. ফলের রস বা জুস 

একজন সুস্থ মানুষকে প্রতিদিন একটি নিদৃষ্ট পরিমাণ ফল খাওয়া দরকার। সুস্থ মানুষ আস্ত ফলের বদলে ফলের রস বা জুস খেতে পারেন।

কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপদজনক হতে পারে ফলের জুস বা ফলের রস। কারণ, ফলের রসে ফাইবার বা আঁশ থাকে না, এবং এতে শর্করা ও চিনির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে ফলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

প্যাকেটজাত ফলের জুস বা রসও ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক। তবে হ্যাঁ ডায়াবেটিস রোগীরা আস্ত ফল খেতে পারবেন। কারণ, আস্ত ফলে ফাইবার বা আঁশ থাকে যা রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

৪. কিসমিস

কিসমিস পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। বিভিন্ন রান্নায় কিসমিসের ব্যবহার আদিকাল থেকেই। সুস্থ মানুষের জন্য কিসমিস অনেক পুষ্টিকর একটি শুষ্ক ফল। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

এক কাপ কিসমিসে প্রায় ১১৫ গ্রামের মতো শর্করা থাকে। আর ডায়াবেটিস রোগীর শর্করা খাওয়া আর বিষ খাওয়া একই কথা। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকা একান্তই জরুরী।

৫. ফ্রেন্স ফ্রাই

বর্তমানে ফ্রেন্স ফ্রাই অনেক জনপ্রিয় একটি খাবার। জনপ্রিয় হলেও ডায়াবেটিস রোগীর জন্য নিষিদ্ধ একটি খাবার। কারণ, রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়ার প্রচণ্ড ক্ষমতা আছে ফ্রেন্স ফ্রাইয়ের।

ফ্রেন্স ফ্রাই ডুবো তেলে ভাঁজা হয়ে থাকে ফলে এতে মাত্রাতিরিক্ত ক্যালোরি থাকে যা শুধু ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর নয় বরং একজন সুস্থ মানুষের জন্যও ক্ষতিকর। এছাড়াও আলুর চিপসও ডায়াবেটিস রোগীর খাওয়া উচিৎ নয়।

৬. সাদা পাউরুটি

সাদা পাউরুটি তৈরি হয় মূলত পরিশোধিত স্টার্চ থেকে। সাদা আটা বা ময়দা থেকে যেসব খাবার তৈরি হয় তাতে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়।

তাই ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাদা আটার তৈরি সব ধরণের খাবার বর্জন করা উচিৎ।

৭. কলা ও তরমুজ

প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তবে উপকারের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক বেশি হতে পারে ডায়াবেটিস রোগীর জন্য।

কারণ কলাতে অতি মাত্রায় সুগার রয়েছে যা একজন ডায়াবেটিস রোগী খেলে তার রক্তে সুগারের মাত্রা তরতর করে বেড়ে যাবে। তরমুজেও প্রচুর পরিমাণে চিনি রয়েছে।

তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ডায়াবেটিস রোগীকে অবশ্যই তরমুজ এবং কলাকে খাদ্য তালিকা হতে বাদ দিতে হবে।

জেনে নিন, খালি পেটে পানি পান করার উপকারিতা

৮. কোমল পানীয়

কোন কিছু খাওয়ার পর কোমল পানীয় পান করা একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়ে গেছে বর্তমানে। সুস্থ অসুস্থ কিংবা ডায়াবেটিস রোগী সবার জন্য কোমল পানীয় ক্ষতিকর।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কোমল পানীয় পান করা মানেই জেনে শুনে বিষ পান করা। কারণ কোমল পানীয়তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট এবং সুগার যা পান করলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় খুব তারাতারি।

তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কোমল পানীয় বর্জন করা জরুরী।

৯. ফাস্টফুড

একটু সময় পেলে পরিবারের সবাই মিলে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ফাস্টফুট খেতে। চাউমিন, এগ রোল, ফ্রেন্স ফ্রাই, বার্গার ইত্যাদি খাবারে রয়েছে সবার অনেক আগ্রহ।

কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে এই খাবারগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট। নিয়মিত এসব খাবার খেলে শরীরের ওজোন বৃদ্ধি হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, খেতে ভালো লাগলেও এই খাবারগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। ফাস্টফুড খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় ফলে ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খাবারগুলো অনেক বড় ধরণের ক্ষতি ডেকে নিয়ে আসে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই ধরণের খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকাই উত্তম।

১০. রিফাইন্ড তেল

আমরা কম বেশি সবাই ধারণা করে থাকি যে রিফাইন্ড তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কিন্তু আসলে ধারনাটি মোটেও ঠিক নয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এই ধরণের তেলে ভাঁজা চিপস জাতীয় খাবারগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

এই খাবার খেলে রক্তে সুগার এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে রিফাইন্ড তেল খাওয়া থেকে বিরত থাকা দরকার।

১১. আইসক্রিম এবং আইসক্রিম জাতীয় খাবার

ছোট বড় সবার কাছে প্রিয় একটি খাবার হলো আইসক্রিম। কাপকেক, পেস্ট্রি, আইসক্রিম ইত্যাদির নাম শুনলেই তা না খাওয়া পর্যন্ত মন ছটফট করতে থাকে অনেকেরই।

এসব খাবার আমাদেরকে অনেক তৃপ্তি দিলেও তা শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। এসব খাবার খেলে যেহেতু ইনসুলিনের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় সেহেতু ডায়াবেটিস রোগীর জন্য এসব খাবার খাওয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।

তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে এসব খাবার থেকে দূরে থাকা জরুরী।

১২. অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার

ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ খাবার রান্নায় অতিরিক্ত মশলা ব্যবহার করে থাকে। আর এই মশলাযুক্ত খাবার খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে। প্রায় প্রতিদিন আমরা অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার আমাদের খাবার তালিকায় রাখি।

যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের এসব খাবার খাওয়া মোটেও উচিৎ না। অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খেলে ইনসুলিনের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞগণ।

১৪. আলু

মাছ, মাংস কিংবা শাক আমরা প্রায় সব তরকারীতে আলুর ব্যবহার করে থাকি। আলুতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ট্রিপ্টোফ্যান, ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, লুটেইন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ আছে।

আলু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো একটি খাবার কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ, আলুতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের আলু খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ।

১৫. আম

আমকে বলা হয়ে থাকে ফলের রাজা। আম মৌসুমি ফল হলেও প্রায় সারা বছর পাওয়া যায়। ভিটামিন সি ছাড়াও অন্যান্য সব খনিজ উপাদান পর্যাপ্ত রয়েছে এই ফলে।

স্বাস্থ্যসম্মত একটি ফল হলেও এতে সুগারের পরিমাণ বেশি থাকায় ডায়াবেটিস রোগীর জন্য স্বাস্থ্যসম্মত নয়। অতিরিক্ত সুগার থাকায় আম খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ ডায়াবেটিস রোগীদের।

১৬. সফেদা

সাফেদা একটি দেশীয় ফল। অনেকেই এই ফল পছন্দ করেন না আবার অনেকেই পছন্দ করেন। এই ফলে সুগারের মাত্রা অনেক বেশি থাকায় ডাক্তাররা এই ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন ডায়াবেটিস রোগীদের।

১৭. ননীযুক্ত দুধ

একটি আদর্শ খাবারের নাম যদি কাউকে জিজ্ঞেস করা হয় তবে উত্তরে সবার প্রথমে আসবে দুধ এর নাম। কারণ দুধে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান যা একসাথে অন্যান্য খাবারে পাওয়া যায় না।

তবে ননীযুক্ত দুধে প্রচুর স্যাচুরেটেট ফ্যাট থাকায় ডাক্তাররা ডায়াবেটিস রোগীদের এই দুধ পান করা থেকে বিরত থাকতে বলেন।

পরিশেষে বলা যায় ডায়াবেটিস একটি বংশগত রোগ হলেও বর্তমানে খাদ্যাভ্যাস এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের কারণে যে কারোর হতে পারে।

এই রোগ পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব হয় না তবে সারাজীবন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপরোক্ত খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ।

বন্ধুরা আজ এই পর্যন্ত, আগামীতে দেখা হবে নতুন কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে। ততদিনে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এটাই কামনা।

 

আরও পড়ুন,

 

*লেখাটি শেয়ার করার অনুরোধ রইলো*

Check Also

পুরুষের যে ৬টি শারীরিক সমস্যা অবহেলা করলেই মহাবিপদ Top 6 Health Problem for Men

পুরুষের যে ৬টি শারীরিক সমস্যা অবহেলা করলেই মহাবিপদ

পুরুষ কিংবা নারী সবাই কোন না কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। অনেক সময় নারী পুরুষ …

2 comments

  1. Everything is very open with a very clear explanation of the challenges.
    It was definitely informative. Your site is very helpful.

    Many thanks for sharing!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!