শারীরিক সুস্থতার কথাই বলুন কিংবা মানসিক সুস্থতার কথাই বলুন যেটাই হোক না কেন দুটোর সুস্থতার জন্য আমাদের খাবার গ্রহণ করতেই হবে।
আমাদের অনেকেই জেনে বুঝে পরিমিত খাবার খাই আবার অনেকেই অখাদ্য কুখাদ্য কিংবা শরীরের জন্য ক্ষতিকর এমন খাবারও নিয়মিত খেয়ে থাকি।
আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও মানসিকভাবে ততটা সুস্থ নয়। আবার অনেকেই আছেন যারা শুধু শারীরিক সুস্থতাটাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন কিন্তু মানসিক সুস্থতাকে সবসময়ই অবহেলা করেন। এমনটা করা মোটেও উচিৎ নয়।
আজ আমরা জানবো, কোন কোন খাবার খেলে মানসিক বিষণ্ণতা বৃদ্ধি পায়? কী অবাক হচ্ছেন! অবাক হওয়ারই কথা।
আমরা তো জানিই না, খাবারের মাধ্যমে মানসিক বিষণ্ণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক, যেসব খাবার মানসিক বিষণ্ণতা বৃদ্ধি করে।
সুচীপত্র
যেসব খাবার মানসিক বিষণ্ণতা বৃদ্ধি করে
মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে খাবার গ্রহণ করতেই হবে যদি তা হয় পরিমিত বা নিয়মের মধ্যে তবে সেটা শরীরের জন্য ভালো এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।
আসুন তাহলে জেনে নেই, কোন কোন খাবার গুলো মানসিক বিষণ্ণতা বৃদ্ধি করে?
১. অধিক মাত্রার কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার
শর্করা কিংবা কার্বোহাইড্রেট শরীরের জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান। বেঁচে থাকার জন্য শর্করার দরকার আছেই।
তবে, অধিক পরিমাণে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয় পাশাপাশি মনের জন্যেও ভালো নয়।
অধিক মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করলে মানসিক অস্থিরতা এবং মানসিক বিষণ্ণতা বৃদ্ধি পায়।
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ২৫০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা উচিৎ। হোক ভাত কিংবা রুটি বা অন্যকিছু।
পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট আরও বেশি ক্ষতিকর। সুতরাং মানসিক বিষণ্ণতা দূর করতে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ থেকে বিরত থাকা উচিৎ।
যদি তা সম্ভব না হয় তবে সীমিত পরিমাণ গ্রহণ করা যেতে পারে, মনে রাখবেন এর পরিমাণ যেন ২৫০ গ্রাম এর বেশি না হয়।
আরও পড়ুন, পুরুষের যে ৬ টি সমস্যা যা অবহেলা করলেই বিপদ!
২. সুগার বা চিনিযুক্ত খাবার
আমাদের মাঝে অধিকাংশ মানুষই চিনি জাতীয় খাবার বা মিষ্টি খেতে পছন্দ করি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এটা আমাদের শরীর এবং মন মানসিকতায় কত বড় ক্ষতি করে থাকে।
অতিরিক্ত মাত্রায় চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে অন্ত্রের মাইক্রোবায়ামে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি করতে পারে এর ফলে মন মানসিকতা বা মেজাজের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। অর্থাৎ মানসিক বিষণ্ণতার সৃষ্টি হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ২৫ গ্রাম চিনি বা সুগার গ্রহণ করতে পারবেন।
২৫ গ্রামের বেশি চিনি গ্রহণ করলে শরীরের কোন উপকারই নেই বরং হতে পারে স্থূলতা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বেশি হওয়া ইত্যাদি।
৩. ফ্রেন্স ফ্রাই
বর্তমানে ফ্রেন্স ফ্রাই একটি জনপ্রিয় খাবারে রুপ নিয়েছে। কিন্তু এই জাংঙ্ক ফুড স্বাস্থ্যের জন্য কতোটা ক্ষতিকর তা আমাদের ধারণার একেবারেই বাইরে।
ফ্রেন্স ফ্রাই ট্রান্স ফ্যাটের অন্যতম একটি উৎস যা মানসিক বিষণ্ণতার অন্যতম কারণ।
৪. প্রক্রিয়াজাত খাবার
প্রক্রিয়াজাত খাবার বা প্রসেসড খাবার আমরা প্রতিনিয়ত গ্রহণ করে থাকি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রক্রিয়াজাত খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ করলে শারীরিক ক্ষতি তো হয়ই সাথে মানসিক বিষণ্ণতার সৃষ্টি হয়।
মানসিকভাবে প্রফুল্ল থাকতে হলে প্রক্রিয়াজাত খাবারকে না বলা উচিৎ।
আরও পড়ুন, খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠার উপকারিতা
৫. গ্লুটেন
গ্লুটেন এক ধরণের প্রোটিন যা অনেকটা আঠার মতো। এটি মূলত খাবার তৈরির সময় ব্যবহার করা হয় খাবারকে ফুলকো করার জন্য।
পাউরুটি, কেক, পাস্তা, সস, চিপস ইত্যাদি খাবারে গ্লুটিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই সমস্ত গ্লুটিনযুক্ত খাবার শরীরের ক্ষতি করার পাশাপাশি মানসিক বিষণ্ণতা বৃদ্ধি করে।
সুতরাং মানসিকভাবে প্রফুল্ল থাকতে হলে সর্বদাই গ্লুটিনমুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিৎ।
আমরা শরীরকে ভালো রাখতে সুস্থ রাখতে অনেক কিছুই করে থাকি, কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কোন চিন্তা ভাবনা করি না। এরকমটা করা মোটেও উচিৎ নয়।
মানসিক স্বাস্থ্য বা মানসিকভাবে প্রফুল্ল থাকা অপরিহার্য একটি বিষয়। তাই উপরোক্ত বিষয়গুলোর উপর মনযোগী হওয়া প্রয়োজন।
খুব সুন্দর ও দরকারি একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
খাবারের কারণে মানসিক বিষণ্ণতা হয় আমার জানা ছিল না। আপনার লেখাটি পড়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারলাম। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।