ডায়াবেটিস রোগটির সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে আর রেহাই নেই, সারাজীবন ভুগতে হবে। তবে এই রোগ হয়ে গেলে খাবার নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে একে খুব সহজে নিয়ন্ত্রন করে রাখা যায়।
কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে ডায়াবেটিস সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না। আসুন জেনে নেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণকারী খাবারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
সুচীপত্র
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে যেসব খাবার
- ১. ভিটামিন সি জাতীয় খাবার
- ২. বাদাম
- ৩. মটরশুঁটি
- ৪. সবুজ শাক সবজি
- ৫. মাছ
- ৬. গম
- ৭. মিষ্টি কুমড়া এবং কুমড়োর বীজ
- ৮. করলা
- ৯. খেজুর
- ১০. অ্যাভোকাডো
- ১১. দুধ ও দই
- ১২. পেয়ারা
- ১৩. তিসিবীজ
- ১৪. পিনাট বাটার
- ১৫. আপেল
- ১৬. ডিম
- ১৭. দারুচিনি
- ১৮. হলুদ
- ১৯. ব্রকলি
- ২০. অলিভ অয়েল (এক্সট্রা ভার্জিন)
- ২১. স্ট্রবেরি
- ২২. রসুন
- ২৩. চিয়া বীজ
- ২৪. শিম
- ২৫. লাল চাল
- ২৬. অ্যাসপ্যারাগাস
- ২৭. বার্লি
- ২৮. আখরোট
- ৩০. শশা
- ৩১. গ্রীন টি/সবুজ চা
- ৩২. এন্টি-অক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার
- ৩৩. টক-জাতীয় ফল
- ৩৩. ইসুব-গুলের ভুষি
- ৩৪. আদা
- ৩৫. লাল চিড়া
- ৩৬. লাল আটার রুটি
- ৩৭. টমেটো
- ৩৮. লেবু
- ৩৯. কমলালেবু ও মালটা
- ৪০. আমলকী
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে যেসব খাবার
এখানে আমি ৪০ টি খাবারের কথা উল্লেখ করেছি, যা নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আসুন জেনে খাবারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
১. ভিটামিন সি জাতীয় খাবার
পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো ভিটামিন সি। বিভিন্ন ফলমূল, শাক সবজি হতে পাওয়া ভিটামিন সি অর্থাৎ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নানা ধরণের ক্ষতিকর পদার্থ থেকে শরীরকে রক্ষা করে থাকে।
ক্ষতিকর পদার্থের মধ্যে অন্যতম হলো ফ্রী র্যাডিক্যাল যা ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রী র্যাডিক্যালের সাথে যুদ্ধ করে তাদের ধংশ করে দেয়।
ভিটামিন সি রক্তে গ্লুকোজ কমাতে সাহায্য করে থাকে, খারাপ কোলেস্টেরলকে শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
টক জাতীয় ফল যেমন, লেবু এবং লেবু জাতীয় সকল ফলে প্রচুর ভিটামিন সি পাওয়া যায়। মালটা, জাম, আনারস, কমলা, পেঁপে, আমলকী, আঙ্গুর, ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
এছাড়াও সবুজ শাক সবজিতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস এর হাত থেকে রক্ষা পেতে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার এর বিকল্প নেই।
২. বাদাম
পার্কে বসে আড্ডা দিতে বসেছেন কিন্তু বাদাম থাকবে না, তা কি হয়! শুধু আড্ডা জমানোর জন্য বাদাম খাই কিন্তু আমরা অনেকেই এর গুণাগুণ সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না।
একজন সুস্থ মানুষের জন্য বাদাম খাওয়া জরুরী তাছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও বেশ উপকারী। আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রকারের বাদাম পাওয়া যায়। প্রায় সব বাদামে Fiber বা আঁশ থাকে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য থাকে শর্করা।
আসুন জেনে নেই প্রতি ৫০ গ্রাম বাদামের মধ্যে কতো পরিমাণ শর্করা থাকে?
প্রতি ৫০গ্রাম বাদামে শর্করার পরিমাণঃ
-
-
- পিক্যান – ২.১৪ গ্রাম
- আখরোট – ৩.৫৭ গ্রাম
- পিস্টাশিও – ৮.৯৩ গ্রাম
- ক্যাশু – ১৩.৭৫ গ্রাম
- আলমন্ড – ৪.৬৪ গ্রাম
-
একটি গবেষণা প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, নিয়মিত বাদাম খেলে রক্তে সুগারের পরিমাণ কমে আসে এছাড়াও শরীরের ভিতরে থাকা খারাপ কোলেস্টরলকে(LDL) কমিয়ে দেয় , HbA1c কমে যায়, এবং শরীরের প্রদাহ কমে যায়।
কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে যা শরীরে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। আমরা জানি কোলেস্টরলের মাত্রা বেশি হলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৬-৭ টি কাঠবাদাম খেলে হার্ট সুস্থ থাকে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। কারণ, ডায়াবেটিস কমাতে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ওমেগা ৩ অনেক বেশি উপকারী।
জেনে রাখুন, ডায়াবেটিস কি? কত প্রকার? কেন ডায়াবেটিস হয়?
৩. মটরশুঁটি
ডায়াবেটিস কমানোর ক্ষেত্রে মটরশুঁটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রতিদিন যদি এক কাপ পরিমাণ মটরশুঁটি নিয়মিত খাওয়া যায় তবে শরীরে গ্লুকোজ এবং কোলেস্টরলের মাত্রা কমে যায়।
ফলে টাইপ ১ ও টাইপ ২ এ দুই ধরণের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও মটরশুঁটিতে চর্বিমুক্ত প্রোটিন, শর্করা, এবং Fiber বা আঁশ থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
৪. সবুজ শাক সবজি
সব ধরণের শাক সবজি যেমন কচু শাক, লাউ, শিম, চিচিংগা, পালং শাক, লাল শাক, ঝিংগা, ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন এবং ফাইবার বা আঁশ রয়েছে। যা খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও সবুজ শাক সবজি খেলে উচ্চরক্তচাপ এবং শরীরের খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। ক্যালোরি এবং শর্করা রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
সবুজ শাকসবজিতে শর্করা এবং ক্যালোরির মাত্রা অনেক কম থাকে তাই যদি শাক সবজি বেশি বেশি খাওয়া যায় তবে বাহির থেকে অতিরিক্ত ক্যালোরি ও শর্করা শরীরে প্রবেশ করবে না ফলে রক্তের সুগার স্বাভাবিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হতে বাধ্য।
একটি গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে বেশি বেশি কলমি শাক ও পালং শাক খেলে শরীরের প্রদাহ এবং রক্তের সুগার কমিয়ে দেয়।
কারণ, কলমি শাক এবং পালং শাক এ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য ভিটামিন রয়েছে যা হাই ব্লাড প্রেসার রোগী এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এছাড়াও সবুজ শাক সবজি চোখের জন্যও অনেক উপকারী।
শাক সবজি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে বলে বর্তমানে চিকিৎসকগণ ডায়াবেটিস রোগীদের বেশি বেশি সবুজ শাক সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৫. মাছ
আমরা জানি ডায়াবেটিস মানে হচ্ছে ইনসুলিন এর কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া অথবা শরীরে ইনসুলিনের উৎপাদন কমে যাওয়া। মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত হয়।
খাল বিল কিংবা নদীর মাছের তুলনায় সামুদ্রিক মাছে বেশি পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ফ্যাটহীন প্রোটিন।
রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা এবং হাই ব্লাড প্রেসার কমাতে সহায়তা করে থাকে ফ্যাটহীন প্রোটিন।
একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিয়মিত মাছ খেলে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে যায়।
অপর একটি গবেষণা প্রতিবেদনে গবেষকরা উল্ল্যেখ করেছেন, যারা সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ দিন দিন মাছ খেয়েছেন তাদের শরীরের প্রদাহ অনেক কমে গেছে এবং তাদের রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড এর মতো ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রাও কমে গেছে।
এছাড়াও মাছে একপ্রকার উন্নতমানের আমিষ রয়েছে যা ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি কমিয়ে দেয় এবং পেট ভরা রাখতে যথেষ্ট সহায়তা করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী হওয়ার কারণে বর্তমানে ডাক্তাররা ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৬. গম
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গম খুবই উপকারী একটি খাবার। গমের ভাত কিংবা গম আটা করে রুটি বানিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
এর কারণ হচ্ছে এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
জেনে নিন, যে কারণে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়
৭. মিষ্টি কুমড়া এবং কুমড়োর বীজ
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিষ্টি কুমড়া অনেক উপকারী একটি সবজি। গ্রামে কিংবা শহর আমাদের দেশে সব জায়গায় পাওয়া যায় এবং সহজলভ্য। মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত মিষ্টিকুমড়া খেলে শরীরের ওজন কমে এবং ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যায়।
এছাড়াও মিষ্টিকুমড়া চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি সবজি। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। আমরা জানি ভিটামিন এ এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়ে থাকে।
মিষ্টি খাওয়ার প্রতি ডায়াবেটিস রোগীদের এক্সট্রা একটা আগ্রহ কাজ করে। যদি মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে হয় তবে দুই একটি কুমড়োর বীজ খেতে পারেন। এতে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে। যার ফলে রক্তে সুগারের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৮. করলা
করলায় Anti-Diabetes এবং Anti-Cancer প্রোপার্টিস রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা গবেষণা প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছেন। বিজ্ঞানীরা আরও বলেন করলাতে এমন শক্তিশালী উপাদান রয়েছে যা ইনসুলিনের থেকেও অনেক শক্তিশালী।
তাই ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত করলার জুস পান করার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
৯. খেজুর
অনেকেই মনে করতে পারেন যে খেজুর তো অনেক মিষ্টি, এই ফল যদি ডায়াবেটিস রোগী খায় তবে তাদের ডায়াবেটিস আরও বেড়ে যাবে। এই ধারনাটি পুরোপুরি মিথ্যা।
খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার বা আঁশ যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে অন্যান্য ফলের তুলনায় খেজুরে অনেক বেশি মাত্রায় অ্যান্টিওক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে যথেষ্ট সহায়তা করতে পারে।
১০. অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে প্রচুর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে। এই মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট আমাদের দ্রুত খাবার হজম করতে বাধা প্রদান করে, ফলে হজমক্রিয়া ধীরে ধীরে হয়। এর কারণে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় না।
এছাড়াও অ্যাভোকাডোতে এক ধরণের উপকারী ফ্যাট রয়েছে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
শিখে নিন, ঘরে বসেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানোর উপায়
১১. দুধ ও দই
আমরা জানি দুধ এবং দই থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। দুধ এবং দুধের তৈরি বিভিন্ন খাবার যেমন দই, পনির ইত্যাদি খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী।
১২. পেয়ারা
পেয়ারাকে ডায়াবেটিস রোগীর সুপার ফুড বলা হয়ে থাকে। পেয়ারাতে অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করতে পারে।
১৩. তিসিবীজ
তিসিবীজে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। আমরা আগেই জেনেছি যে, ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড রক্তে সুগার কমাতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে তিসিবীজ খাওয়া উচিৎ।
১৪. পিনাট বাটার
বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, পিনাট বাটার ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। এছাড়াও এতে প্রচুর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে।
এই মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট আমাদের দ্রুত খাবার হজম করতে বাধা প্রদান করে, ফলে হজমক্রিয়া ধীরে ধীরে হয়। এর কারণে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় না।
১৫. আপেল
আপেলে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার রয়েছে। আর আঁশ বা ফাইবার যুক্ত খাবার ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আপেল খেলে প্রায় ২৭% পর্যন্ত ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি কমে জায়। আপেল বিশেষ করে টাইপ টু ডায়াবেটিস এর জন্য বেশ উপকারী।
তাই যারা টাইপ টু ডায়াবেটিস এ ভুগতেছেন তারা নিয়ম করে প্রতিদিন অন্তত একটি করে আপেল খেতে পারেন।
১৬. ডিম
নানা ধরণের স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে ভরপুর ডিম। ডিমে রয়েছে শক্তিশালী ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড। ফ্যাটি এসিড এর স্বাস্থ্যগত গুণাগুণ নিয়ে ইতিপূর্বে আমরা আলোচনা করেছি।
ডিমে যে সাদা অংশ রয়েছে তা হার্ট এর স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সহায়তা করে। আমরা জানি ডিমে প্রচুর কোলেস্টেরল পাওয়া যায় তবে এই কোলেস্টেরল রক্তের সুগার কমিয়ে আনতে সহায়তা করে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগী নিয়মিত ২টি করে ডিম খেলে তাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় এবং রক্তের সুগার অনেকাংশে কমে যায়।
এর পিছনে কিছু কারণ রয়েছে। যেমন, ডিম খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে যার ফলে ইনসুলিন সেন্সিটিভিটি বাড়িয়ে দেয়, হার্ট এর বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
এছাড়াও ডিমে রয়েছে Zeaxanthin নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট, যা চখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
১৭. দারুচিনি
দারুচিনিকে আমরা সবাই মশলা হিসেবে চিনি। কিন্তু আমরা অনেকেই এই মশলার ঔষধি গুণ সম্পর্কে কিছুই জানি না। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, দারুচিনিতে রয়েছে ক্যান্সার ধ্বংসকারী ক্ষমতা।
এছাড়াও নিয়মিত দারুচিনি খেলে রক্তের সুগার কমে যায় এবং ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বেড়ে যায়। টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ম করে প্রতিদিন একটু একটু করে দারুচিনি চিবিয়ে খাওয়া উচিৎ।
১৮. হলুদ
তরকারীতে হলুদ না দিলে সে তরকারী দেখতে যেমন ফ্যাঁকাসে হয় তেমনি খেতেও রুচি হয় না। এটি তরকারী রান্নার জন্য একটি দরকারি মশলা। তরকারীতে হলুদের ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই।
কিন্তু আপনি জানেন কি! হলুদে অনেক অবিশ্বাস্য ঔষধি গুণ আছে? হ্যাঁ ঠিক পড়েছেন। হলুদে যে উপাদান রয়েছে তার নাম Curcumin যা প্রদাহ এবং রক্তে সুগারের মাত্রা কমায়।
এছাড়াও হলুদ হৃদরোগের ঝুঁকিও কমিয়ে আনে। ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি। হলুদের Curcumin কিডনিকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।
সবাই কিন্তু হলুদ হজম করতে পারে না। যাদের এই সমস্যা রয়েছে তারা হলুদের সাথে সামান্য পরিমাণে গোল মরিচ মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে হলুদ খুব সহজে হজম হয়ে যাবে।
১৯. ব্রকলি
পৃথিবীতে যতগুলো পুষ্টিকর সবজি রয়েছে তার যদি একটি তালিকা করা যায় তবে ব্রকলির নাম থাকবে প্রথম দশ এ।
ব্রকলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, ক্যালোরি এবং অল্প পরিমাণ শর্করা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি উপযুক্ত সবজি হচ্ছে ব্রকলি।
একটি গবেষণা হতে দেখা যায় যে, ব্রকলি ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং ইনসুলিনকে কার্যকর করে তুলতে সাহায্য করে। পাশাপাশি শরীরকে ফ্রী র্যাডিক্যাল এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা চোখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
জেনে নিন, জন্ম নিরোধক ওষুধ খেলে কি ক্ষতি হয়?
২০. অলিভ অয়েল (এক্সট্রা ভার্জিন)
অলিভ অয়েল দুই ধরণের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এটি হচ্ছে অশোধিত এবং অপরটি হচ্ছে শুধু অলিভ অয়েল বা কেমিক্যাল মিশ্রিত অলিভ অয়েল এটি হচ্ছে শোধিত।
বর্তমান বাজারে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল পাওয়া অনেক কষ্টের। তাই কেনার সময় যাচাই বাছাই করে কেনা উচিৎ।
এই এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল হার্ট এর স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে। এতে রয়েছে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে দেয় এবং ভালো কোলেস্টেরলকে বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি ট্রাইগ্লিসারাইডকেও কমিয়ে দেয়।
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল যা রক্তনালীর কোষগুলোকে সতেজ রাখে এবং রক্তনালীর রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
২১. স্ট্রবেরি
অনেকেরই অনেক প্রিয় একটি ফল স্ট্রবেরি। দেখতেও অনেক সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। এর রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যগত গুণাগুণ।
স্ট্রবেরির রং লাল হওয়ার কারণ হচ্ছে এতে Anthocyanins নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। Anthocyanins এর কারণে স্ট্রবেরির রং লাল হয়ে থাকে।
Anthocyanins খেলে শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ কমে যায় সাথে কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমে যায়। টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল স্ট্রবেরি।
রক্তে সুগার কমানোর পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকিও কমিয়ে আনে অনেকাংশে। এক কাপ স্ট্রবেরিতে ক্যালোরি আছে প্রায় ৪৯% এবং শর্করা আছে মাত্র ১১%। এছাড়াও রয়েছে উপকারী ভিটামিন সি।
২২. রসুন
আদিকাল থেকেই রসুন বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনেক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে নিয়মিত রসুন খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় এমনকি রক্তে সুগারও কমে যায়।
যারা হাইপারটেনশনে ভুগতেছেন তারা নিয়মিত রসুন খেলে তাদের উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। রসুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রী র্যাডিক্যাল কে রিমুভ করে দেয় ফলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়।
এক কোয়া রসূনে প্রায় ১% শর্করা এবং ৮% ক্যালোরি।
২৩. চিয়া বীজ
রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে চিয়া বীজ। এতে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যা শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে।
এছাড়াও চিয়া বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাংগানিজ, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রোটিন, ফাইবার বা আঁশ, এবং ক্যালসিয়াম।
নিয়মিত চিয়া বীজ খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, উচ্চরক্তচাপ কমে যায়, ডায়াবেটিস তথা রক্তে সুগারের মাত্রা কমে, ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
২৪. শিম
শিমে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে যার কারণে নিয়মিত শিম খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ হয়। এতে গ্লুকোজের পরিমাণ অনেক কম থাকে। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীরা নিশ্চিন্তে শিম খেতে পারেন।
২৫. লাল চাল
আমরা সবাই ভাত খাই। ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য। বর্তমানে যে চালের ভাত খাই তাতে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি থাকে ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা অনেক বেড়ে যাওয়ার অনেক সম্ভাবনা থাকে।
তাই ডাক্তাররা ডায়াবেটিস রোগীদের ভাত খেতে নিষেধ করে থাকেন। তবে যদি আপনি লাল চালের ভাত খেতে পারেন তবে ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি প্রায় ১৫ শতাংশ কমে আসবে।
লাল চালে এক প্রকার ফাইবার থাকে যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বেশ উপকারী।
২৬. অ্যাসপ্যারাগাস
অ্যাসপ্যারাগাস রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে এবং ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি কমায়। শরীরের মধ্যে ইনসুলিনের নিঃসরণ বা উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
দেহের ভিতরে অতিরিক্ত গ্লুকোজকে বার্ন করতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীদের একটি উপকারী খাবার হলো অ্যাসপ্যারাগাস।
২৭. বার্লি
বার্লি একটি প্রাচীন শস্য। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম যখন শস্যের চাষাবাদ শুরু হয় ঠিক তখনকার শস্য হচ্ছে বার্লি। এটি নরম এবং ফাইবারযুক্ত একটি খাবার।
এটি নিয়মিত খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং পাশাপাশি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এটি ফাইবারযুক্ত খাবার বলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ।
২৮. আখরোট
যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের শরীরে মূলত ইনসুলিনের পরিমাণ বেশি থাকে অর্থাৎ তাদের শরীরের ইনসুলিন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন নিয়মিত আখরোট খেয়েছেন তাদের শরীরের ওজন কমে গেছে এবং ইনসুলিনের মাত্রা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে এমনকি ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে আগের তুলনায় অনেক গুণ।
শরীরে বেশি মাত্রায় ইনসুলিন থাকলে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা না থাকলে কিডনি এবং ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
২৯. ফ্ল্যাক্স সীড
ফ্লাক্স সীড খাদ্যের পাশাপাশি ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে প্রায় ১০০ বছর ধরে। ফ্লাক্স সীড বর্তমানে একটি মানসম্পন্ন এবং শক্তিশালী খাবার হিসেবে পরিচিত।
রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে এই খাবারের রয়েছে অনন্য ক্ষমতা। এই খাবার নিয়মিত খেলে হৃদরোগ, ক্যানসার এবং ডায়াবেটিস এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৩০. শশা
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, নিয়মিত শশা খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যায়। আর রক্তে সুগারের মাত্রা কমে গেলে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। শশাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি রয়েছে যা দ্রুত সুগার কমাতে সাহায্য করে। তাই মেদ কমাতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে নিয়মিত শশা খাওয়া দরকার।
জেনে রাখুন, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়
৩১. গ্রীন টি/সবুজ চা
গ্রীন টি বা সবুজ চা এ একপ্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যার নাম ক্যাটেচিন। এই ক্যাটেচিন ক্যানসার এর ঝুঁকি কমায়, উচ্চরক্তচাপ কমিয়ে আনে, এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
৩২. এন্টি-অক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার
ইতিপূর্বে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেসকল খাবারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে সেগুলো নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, শরীর থেকে ফ্রী র্যাডিক্যাল রিমুভ করে, শরীরের ত্বক সতেজ রাখে, এবং কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
৩৩. টক-জাতীয় ফল
টক জাতীয় ফল যেমন কমলা লেবু, আমলকী, মালটা ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করতে পারে।
৩৩. ইসুব-গুলের ভুষি
আদিকাল থেকে মানুষ ইসুব-গুলের ভুষিকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে হাই ফাইবার যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এছাড়াও ইসুব-গুলের ভুষি এসিডিটি দূর করে এবং কোষ্টকাঠিন্যের মতো সমস্যাকে নিমিষেই দূর করে দেয়।
৩৪. আদা
তরকারী রান্নায় আদার ব্যবহার অনেক আদিকাল থেকে হয়ে আসছে। কিন্তু এর ওষুধি গুণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। আদাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
এছাড়াও আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যানসারের হাত থেকে রক্ষা করে, উচ্চরক্তচাপ কমায়, পেটের এসিডিটি কমায়।
৩৫. লাল চিড়া
যারা ডায়াবেটিসে ভুগতেছেন তারা মূলত ভাত খাওয়া অনেকটা কমিয়ে দেন, তার বদলে রুটি খেয়ে থাকেন। সকালের নাস্তায় রুটির বদলে লাল চিড়া খেতে পারেন।
লাল চিড়ায় একপ্রকার ফাইবার থাকে এবং এতে শর্করার পরিমাণ থাকে অনেক কম।
৩৬. লাল আটার রুটি
ভাতের বদলে ডায়াবেটিস রোগীরা রুটি খেয়ে থাকেন। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে সাদা আটাতে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি থাকে কিন্তু লাল আটার রুটিতে শর্করার পরিমাণ অনেক কম থাকে এবং লাল আটাতে প্রচুর ফাইবার থাকে।
তাই ডায়াবেটিস কমাতে ভাত এবং সাদা আটার রুটি না খেয়ে লাল আটার রুটি খাওয়া উচিৎ।
৩৭. টমেটো
টমেটোর গুণাগুণ এবং উপকারিতার কথা আমরা সবাই জানি। শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে টমেটো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
টমেটো সালাদ হিসেবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
৩৮. লেবু
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিতামিন সি রয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে একটি লেবুর রস কুসুম কুসুম গরম পানিতে মিশেয়ে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়, পেটের মেদ কমে যায়, উচ্চরক্তচাপ কমে যায়।
এছাড়াও নিয়মিত লেবু খেলে ক্যানসারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় কারণ লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রী র্যাডিক্যাল রিমুভ করতে সাহায্য করে।
৩৯. কমলালেবু ও মালটা
মালটা এবং কমলালেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বেশ উপকারী।
৪০. আমলকী
ডায়াবেটিস কমাতে আমলকী অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। রক্তে সুগার কমানোর পাশাপাশি হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।
যদি ডায়াবেটিস রোগীর কিডনির সমস্যা না থাকে তাহলে তারা প্রতিদিন একটি করে আমলকী খালি পেটে খেতে পারবেন। আমলকীতে প্রায় ১০০ শতাংশ ভিটামিন সি রয়েছে।
উপরোক্ত খাবারগুলো আমাদের হাতের নাগালেই পাওয়া যায় এবং দামেও অনেক সস্তা। তাই ডায়াবেটিস কমানোর জন্য কিংবা হার্টের অসুখ হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য উপরোক্ত খাবারগুলির বিকল্প নেই। আসুন খাবার খাই নিয়ম করে, মুক্ত থাকি রোগ হতে।
আজ এই পর্যন্ত, আগামীতে দেখা হবে নতুন কোন গুরুত্বপূর্ণ টপিকস নিয়ে। ততদিনে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
আরও পড়ুন,
*লেখাটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন*