পরীক্ষায় ভালো করার সহজ উপায় কি? এমন কোন স্টুডেন্ট নেই যে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে না। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর একটাই চিন্তা কীভাবে পরীক্ষায় ভালো করা যায় বা পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার সহজ উপায় কি?
প্রায় সকল ছাত্র ছাত্রী উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর ঠিকঠাক উত্তর খুঁজে পায় না। অনেকেই আবার মনে করে থাকেন এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া অসম্ভব। অনেকেই আবার নিরাশ হয়ে পরে।
পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য আসলে আলাদীনের জাদুর চেরাগের প্রয়োজন হয় না। জানা প্রয়োজন কিছু সহজ কৌশল।
একটা কথা মাথায় রাখা জরুরী যে, আজ পর্যন্ত কোন ছাত্র ছাত্রী পরিশ্রম ছাড়া ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারেনি।
এমন অনেক ছাত্র ছাত্রীকে দেখা যায় তারা সারাক্ষণ পড়াশোনা নিয়েই পরে থাকে। এভাবে কেউ কেউ ভালো ফলাফল করে আবার কেউ কেউ ভালো ফলাফল করতে পারে না।
যদি এমন হয় যে, পরিশ্রম কম হল আবার পরীক্ষায়ও ভালো ফলাফল হল তাহলে কেমন হবে? হ্যাঁ তাই, কম পরিশ্রমে ভালো রেজাল্ট করা যায়। যদি কিছু সহজ উপায় বা কৌশল জানা থাকে।
আসুন জেনে নেই, পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার সহজ কিছু কৌশল।
সুচীপত্র
- পরীক্ষায় ভালো করার সহজ উপায়
- ১. প্ল্যানিং করে পড়াশোনা করা
- ২. না দেখে লেখার প্র্যাকটিস করা
- ৩. ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া
- ৪. গ্রুপ করে পড়াশোনা করা
- ৫. ক্লাসের প্রতি মনোযোগ দেয়া
- ৬. হ্যান্ড নোট তৈরি করা
- ৭. মনে রাখার টেকনিক ব্যবহার করা
- ৮. পরীক্ষার খাতায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা
- ৯. পড়া শুরু করার পূর্বে গোল সেট করা
- ১০. মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয়া
- ১১. রুটিন অনুযায়ী পড়াশোনা করা
- ১২. গল্পের মতো করে পড়াশোনা করা
- ১৩. শিক্ষকদের সহায়তা নেয়া
- ১৪. একই পড়া বারবার পড়া
- ১৫. পড়াশোনায় অবহেলা না করা
- ১৬. স্লাইড শো তৈরি করা
- ১৭. কী-পয়েন্টগুলো হাইলাইট করা
- ১৮. ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করা
পরীক্ষায় ভালো করার সহজ উপায়
বেশ কয়েকটি সহজ কৌশল রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করলে একজন পরীক্ষার্থী খুব সহজেই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারবে।
কথা না বাড়িয়ে জেনে নেয়া যাক, পরীক্ষায় ভালো করার সহজ পদ্ধতিগুলো কি কি?
১. প্ল্যানিং করে পড়াশোনা করা
পড়াশোনার ক্ষেত্রে ভাল্লাগে না রোগ প্রায় সবার ক্ষেত্রে কাজ করে। আজ ভালো লাগছে না, আজ আর পড়বো না, কাল থেকে ধুমায়া পড়াশোনা শুরু করবো।
এই আজ কাল করতে করতে সামনে চলে আসে পরীক্ষা। এ কারণে তৈরি হয় পরীক্ষাভীতি। পরীক্ষাভীতি থাকলে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।
শুধু পরীক্ষাভীতিই নয় এর সাথে থাকে পড়াশোনার বিশাল চাপ। এই চাপ নিয়ে পড়াশোনা করা আর পরীক্ষা দেয়া এবং সেই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
পড়াশোনার কার্যকরী প্ল্যান না থাকার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এমন সব ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয়। তাই ক্লাশ শুরু হওয়ার সময় থেকে পড়াশোনার একটা প্ল্যান তৈরি করা প্রয়োজন।
এই প্ল্যান সবসময় একরকম থাকবে বা থাকতেই হবে ব্যাপারটা মোটেও এমন নয়। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এর পরিবর্তন কিংবা একটু এদিক সেদিক হতে পারে।
প্ল্যানিং করে পড়াশোনা করলে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে গোছালো করে তুলবে পাশাপাশি মূল্যবান সময়কে কাজে লাগাতে সহায়তা করবে।
অনেকেই পড়াশোনাকে ভয় পায় তাই মনোযোগটা সরাসরি পড়াশোনার উপর থাকে না। এর থেকে বেরুনোর পথ হচ্ছে পড়াশোনা শুরুর আগে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করা।
পড়াগুলোকে নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে তারপর পড়াশোনা শুরু করা। পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী কোন সময় বা কোন দিন কি পড়বো তা ঠিক করে নেয়া।এতে করে পড়া মনে থাকে বেশি পাশাপাশি পড়তে বেশ সুবিধে হয়।
আরও পড়ুন,
২. না দেখে লেখার প্র্যাকটিস করা
বহুবার পড়ালাম তবুও মনে থাকছে না। এই সমস্যাটি কম বেশি সব ছাত্র-ছাত্রী ফেস করে। পড়া যদি ঠিকঠাক মনে না থাকে তবে পরীক্ষার খাতায় নির্ভুল লেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
সহজে পড়া মনে রাখার জন্য কয়েকবার পড়ে সেই পড়া না দেখে লেখার অভ্যেস করতে হবে। এতে করে পড়া যেমন মনে থাকবে পাশাপাশি ভুলগুলোও চোখে পড়বে।
পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য এবং পড়া মনে রাখার জন্য না দেখে লেখার অভ্যেস করা অপরিহার্য। এতে করে পরীক্ষার খাতায় নির্ভুল লেখা সম্ভব হবে। এবং ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব হবে।
৩. ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া
মানুষ মাত্রই ভুল করে কিন্তু ভুল থেকে যে শিক্ষা গ্রহণ করে না তারা ভুলের মধ্যেই পড়ে থাকে। জীবনে উন্নতি করতে পারে না। পরীক্ষায়ও ভালো ফলাফল করতে পারে না।
আমরা অনেকেই জানিনা যে ভুল থেকে কোনকিছু যদি শিক্ষা নেয়া যায় তবে তা বহুদিন পর্যন্ত মনে থাকে। পড়াশোনা করতে গিয়ে কোথায় ভুল হল? কেন ভুল হল? এ ভুল থেকে উত্তরণের উপায় কি? কি না বুঝার কারণে ভুল হল?
ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তরগুলো যদি বের করা যায় তবেই সেই পড়া বহুদিন মনে থাকবে। এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা অনেকটাই সহজ হবে।
আরও পড়ুন,
৪. গ্রুপ করে পড়াশোনা করা
গ্রুপ করে পড়াশোনা করাটাকে আমরা গ্রুপ স্টাডি নামে চিনি। কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী একসাথে হয়ে কোন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে বিষয়টি সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা পাওয়া যায়।
গ্রুপ স্টাডি করার মাধ্যমে জটিল জটিল বিষয়গুলো খুব সহজেই আয়ত্ত করা সম্ভব হয়। আলাপচারিতার মাধ্যমে অর্থাৎ গল্পের মাধ্যমে কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করলে সেই বিষয়টি যতই জটিল কঠিন হোক না কেন তা অনেকদিন মনে থাকবে।
আর পড়াশোনা মনে থাকলেই তা পরীক্ষার খাতায় সুন্দরভাবে তুলে ধরা সম্ভব হয়। এরফলে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা বেশ সহজ হয়।
৫. ক্লাসের প্রতি মনোযোগ দেয়া
আমাদের মাঝে অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা ক্লাসের প্রতি মোটেও মনযোগী নয়। তারা মনে করে ক্লাস না করে সারাদিন বাসায় বসে বসে পড়াশোনা করলে ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব। প্রকৃতপক্ষে এটি পুরোপুরি ভুল ধারণা।
পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে হলে প্রতিদিন নিয়মিত ক্লাসে প্রেজেন্ট থাকতে হবে এবং মনোযোগের সাথে সবোগুলো ক্লাস করতে হবে, শিক্ষকের দেয়া লেকচার নোট করে নিতে হবে।
ক্লাস চলাকালীন সময়ে শিক্ষকরা শুধু পড়াশোনা নিয়েই আলোচনা করে না বরং আরও অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকেন।
কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, কোন প্রশ্নটি পরীক্ষায় আসতে পারে ইত্যাদি সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়া যায় ক্লাস করার মাধ্যমে।
জটিল বিষয়গুলো ক্লাসে শিক্ষকের কাছ থেকে বুঝে নিলে সেই বিষয়টি অনেকদিন পর্যন্ত মাথায় থেকে যায়।
তাই বলা যেতে পারে, পরীক্ষায় ভালো করার জন্য নিয়মিত ক্লাস করার কোন বিকল্প নেই এবং অবশ্যই মনোযোগ দিয়েই ক্লাস করতে হবে।
আরও পড়ুন,
৬. হ্যান্ড নোট তৈরি করা
আমাদের মাঝে অনেক স্টুডেন্ট আছে যারা লিখতে চায় না। লিখতে চায় না বলে হাতে লিখে নোটও করা হয় না।
আবার অনেক সময় দেখা যায়, একজন স্টুডেন্ট নোট করেছে সেই নোট সবাই ফটোকপি করে নিয়ে থাকে। এটা করা মোটেও উচিৎ নয়।
পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার জন্য হাতে লিখে নোট করে পড়াশোনা করাটা বেশ কার্যকর। এতে পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধি পায় পাশাপাশি পড়াশোনাকে আকর্ষণীয় করে তোলে।
নোট করে পড়াশোনা করার আরও একটি উপকারিতা হচ্ছে পরীক্ষার সময় খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় না। এবং পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বেশ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।
৭. মনে রাখার টেকনিক ব্যবহার করা
এমন কিছু বিষয় থাকে যেগুলো অবশ্যই অবশ্যই মুখস্ত করতে হয় এবং সবসময় মনে রাখতে হয়। এসব বিষয় সাধারণত খুব সহজে মনে থাকতেও চায় না।
মুখস্তের বিষয়গুলো খুব সহজে মনে রাখার জন্য আমরা বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করতে পারি। যেমন আমাদের পর্যায় সারণী মনে রাখতেই হয়।
যেমন ধরা যাক, পর্যায় সারণীর 4A গ্রুপের মৌলগুলো হল যথাক্রমে C, Si, Ge, Sn, Pb । এগুলোকে সহজে মনে রাখার জন্য একটা সহজ কৌশল মনে রাখা যেতে পারে যেমন, “কাঁদলে সাইকেল গেঞ্জি স্যান্ডেল পাবে”।
অর্থাৎ C= কাঁদলে, Si= সাইকেল, Ge= গেঞ্জি, Sn= স্যান্ডেল, Pb= পাবে।
ছড়া কবিতা বা বাস্তব জীবনের উদাহরণ দিয়েও এসব জটিল বিষয়গুলো মনে রাখা যেতে পারে। এছাড়াও নিজের মতো ছবি এঁকে অথবা ছক এঁকেও মনে রাখা যেতে পারে।
আরও পড়ুন,
৮. পরীক্ষার খাতায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা
গ্রামে গঞ্জে একটি কথা প্রচলিত আছে, আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী। পরীক্ষার খাতায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা এবং সুন্দর হাতের লেখা পরীক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এটি ভালো নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ সাহায্য করে থাকে।
একজন পরীক্ষার্থীর প্রস্তুতি অনেক ভালো কিন্তু গোছালো উপস্থাপন করতে পারল না কিংবা হাতের লেখা মোটেও সুন্দর হল না তাহলে পরীক্ষার নম্বর কিছুটা হলেও কমে আসবে।
একটি কথা মাথায় রাখা জরুরী যে, হাতের লেখা সুন্দর করতে গিয়ে যদি সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া না হয় তবে তার ফলাফলও কিন্তু ভালো হবে না। একারণে পরীক্ষায় টাইম ম্যানেজমেন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
৯. পড়া শুরু করার পূর্বে গোল সেট করা
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, পড়াশোনা শুরু করার পূর্বে গোল সেট করে সেই অনুযায়ী পড়াশোনা করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
একটি বিষয় নিয়ে পড়া শুরু করার পূর্বে কত সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে এবং কতটুকু শেষ করতে পারা যাবে এ নিয়ে একটি গোল তৈরি করে নেয়া উত্তম। এতে পড়ার প্রতি মনোযোগ অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়।
তবে মাথায় রাখা জরুরী যে, এই গোল যেন অবাস্তব কিংবা অবান্তর না হয়। আবেগের বশে কিংবা ঝোঁকের বসে অবান্তর গোল সেট করে পড়াশোনা শুরু করলে তা কিন্তু কোন কাজে আসবে না বরং ঐ সময়ের মধ্যে পড়াটা শেষ করতে না পারলে মনের ভেতরে হতাশা বাসা বাঁধতে পারে।
যা পড়াশোনার জন্য বেশ ক্ষতিকারক। এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।
১০. মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয়া
আমাদের মাঝে অনেক স্টুডেন্ট আছে যারা একটানা ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা অথবা তারও বেশি সময় ধরে পড়াশোনা করে থাকে। এমনটি করা মোটেও ঠিক নয়।
কারণ, অনেক সময় ধরে পড়াশোনা করলে মস্তিষ্কে এক ধরণের ক্লান্তি চলে আসে। আর এই কারণে মস্তিষ্কের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়।
এই বিশ্রামের সময়কাল হতে পারে ৫ থেকে ১০ মিনিট। এই সময়টিতে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলে ভালো হয় অথবা একটু হাঁটাহাঁটি করাও যেতে পারে।
পড়াশোনার মাঝে কিছুটা সময় ব্রেইনকে বিশ্রাম দিলে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি পড়া মনে থাকেও বেশি। যার ফলে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা সহজ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন,
১১. রুটিন অনুযায়ী পড়াশোনা করা
পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য অবশ্যই রুটিন তৈরি করে সে রুটিন অনুসারে পড়াশোনা করতে হবে।
আমাদের মাঝে অনেক ছাত্র ছাত্রী আছে যারা রুটিন তৈরি করে ঠিকই কিন্তু কয়েকদিন তা অনুসরণ করে তারপর বন্ধ করে দেয়।
মনে রাখতে হবে রুটিন অনুসারে পড়াশোনা করলে পড়াশোনার ব্যাল্যান্স ঠিক থাকে। এবং পড়াশোনায় বিরক্তি আসে না। এছাড়াও পরীক্ষার পূর্বের চাপ কমে যায় ফলে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা সম্ভব হয়।
১২. গল্পের মতো করে পড়াশোনা করা
গল্প পোড়তে কিংবা শুনতে আমরা বেশ পছন্দ করি। একবার গল্প পড়লে কিংবা শুনলে তা বহুদিন মনেও থাকে।
গল্পের মতো করে যদি পড়াকেও কনভার্ট করা যায় তাহলে কেমন হয়! হ্যাঁ তাই পড়াকে যদি গল্পের মতো বানিয়ে ফেলা যায় তাহলে পড়াশোনায় বিরক্তিভাব আসবে না। এবং একঘিয়েমি ভাবটা চলে যাবে।
বইয়ের কোন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে একটি চরিত্রে রূপ দিয়ে হাস্যরসের তাকমা লাগিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে যদি পড়া যায় তবে মনে হবে আমি একটি হাস্যরসের বই পড়ছি।
এভাবে পড়াশোনা করলে যত কঠিন এবং জটিল বিষয় হোক না কেন তা অবশ্যই অবশ্যই মনে থাকবে। আর পড়া মনে থাকলেই পরীক্ষায়ও ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব হবে।
জেনে নিন,
১৩. শিক্ষকদের সহায়তা নেয়া
আমাদের মাঝে অনেক স্টুডেন্ট আছে যারা ক্লাসের কোন বিষয় ভালোভাবে না বুঝলে শিক্ষকের কাছে জানতে চায় না। এই জানতে চাওয়াটাকে অনেকে আবার লজ্জাজনক ব্যাপার হিসেবে মনে করে থাকে।
কেউ কেউ আবার মনে করে পরবর্তীতে বই দেখে বা গাইড দেখে বুঝে নেয়া যাবে। আবার কেউ ভাবে বন্ধুর কাছ থেকে বুঝে নেয়া যাবে।
একটা কথা ভীষণভাবে মাথায় রাখা জরুরী যে, ক্লাস চলাকালীন সময়ে কোন ছাত্র ছাত্রী যদি কোন কিছু না বুঝে থাকে তবে শিক্ষকের কাসে সরাসরি বুঝতে চাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
কেননা শিক্ষক ছাড়া অন্য কেউ খুব ভালো করে তা বুঝিয়ে বলতে পারবে না। বন্ধুরা তো পারবেই না। তাই ক্লাসের মধ্যেই না বুঝতে পারা বিষয়গুলো শিক্ষকের কাছ থেকে বুঝে নেয়া উত্তম।
১৪. একই পড়া বারবার পড়া
আজ একটি পড়া মুখস্ত করার পর যদি সেটা ১৫-২০ দিন পর দেখা হয় তবে তা আবার নতুনের মতো লাগবে। এর থেকে বেরুনোর উপায় হচ্ছে একই পড়া বারবার পড়া।
আজ একটি পড়া মুখস্ত করার পর দুদিন পর আবার সেই পড়ায় একবারের জন্য হলেও চোখ বুলিয়ে নেয়া উচিৎ। এভাবে করে পড়াটি মাথায় সেট হয়ে যাবে। যাকে আমরা বলি ঠোঁটস্থ হয়ে যাওয়া।
একটি পড়া যখন ঠোঁটস্থ হয়ে যাবে তখন তা পরীক্ষার খাতায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফলও করা সম্ভব হবে।
জেনে নিন,
১৫. পড়াশোনায় অবহেলা না করা
আজ ভালো লাগছে না, কাল থেকে পড়াশোনা শুরু করবো। এভাবে করতে করতে সামনে পরীক্ষা চলে আসে। আর ঠিক তখনই মাথায় আকাশ ভেংগে পড়ে।
তাই প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিনই পড়া উচিৎ এতে করে পরীক্ষার পূর্বে কোন অতিরিক্ত চাপ মাথায় আসবে না। ফলাফলস্বরূপ পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব হবে।
১৬. স্লাইড শো তৈরি করা
পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার উপায়গুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে পড়াশোনা করা। এই পড়াশোনাটা হতে হবে মানসম্মত। পড়াশোনা যদি মানসম্মত না হয় তবে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল আশা করাটা এক প্রকার বোকামি ছাড়া আর কিছু না।
এখন ডিজিটাল যুগ। ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পড়াগুলোকে স্লাইড শো বানিয়ে নেয়া যেতে পারে। এবং তা রুটিন অনুসারে পড়লে মাথায় দ্রুত সেট হয়ে যাবে।
১৭. কী-পয়েন্টগুলো হাইলাইট করা
বই পড়ার সময় যদি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো হাইলাইট করা থাকে তবে তা পুনরায় খুঁজে পেতে খুব বেশি সময় লাগে না।
মুলত এই একটি কারণে পড়ার গুরুত্বপূর্ণ লাইন অথবা পয়েন্টগুলোকে হাইলাইট করা যেতে পারে। এই পয়েন্টগুলো হাইলাইট করা থাকলে পরীক্ষার সময় পড়াগুলোতে দ্রুত চোখ বুলিয়ে নেয়া যায়।
১৮. ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করা
কথায় আছে, “মানুষ তার স্বপ্নের চেয়েও বড়” এই কথাটি আমাদেরকে শুধু স্বপ্ন দেখাতেই উৎসাহিত করে না বরং ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতেও সাহায্য করে।
একজন মানুষ কিংবা ছাত্র-ছাত্রী কি করছে বা কি পাচ্ছে তার বেশিরভাগই নির্ভর করে তার মন মানসিকতার উপর।
তাই পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার উপায়গুলোর মধ্যে একটি নির্ভরযোগ্য উপায় হচ্ছে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করা।
একটা কথা অবশ্যই মাথায় রাখা জরুরী যে, মানুষ শুধু পজিটিভ বা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে থাকলেই যে সফলতা আসবে বিষয়টা এমনও নয়।
মানুষের জীবনে ব্যর্থতা আসবে এবং এটা স্বাভাবিক। তাই সব ব্যর্থতাকে হাসিমুখে মেনে নিয়ে আমাদের প্রাপ্তিগুলোর প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে। পড়াশোনার ক্ষেত্রেও তাই, তবেই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা সম্ভব হবে।
আরও জেনে নিন,
নিজের সক্ষমতা সম্পর্কে জানতে হবে। ভাবতে হবে নিজে কি করতে পারেন না পারেন। পাশাপাশি ভাবতে হবে নিজের দুর্বলতা সম্পর্কেও।
নিজের দুর্বলতাগুলো নিয়ে কখনোই হতাশ হওয়া যাবে না বরং দুর্বলতাগুলোকে কীভাবে মোকাবেলা করা যায় বা দূর করা যায় সেদিকে মনোযোগী হতে হবে।
শেষ কথা একটাই মানসিকভাবে ভালো থাকা গেলেই বা মানসিকভাবে সুখী হলেই পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা সম্ভব হয় এবং পড়াশোনা ভালোভাবে করতে পারলেই পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব।