কোন কিছু পড়তে বসলেই ঘুম এসে যায় চোখে? এরকম সমস্যায় শুধু আপনি না, পৃথিবীর হাজার হাজার মানুষ ভুগে থাকে। রাতের বেলা পড়তে বসলে স্বাভাবিকভাবে ক্লান্তির কারণে ঘুম আসতে পারে কিন্তু দিনের বেলায় পড়তে বসলেও ঘুম এসে যায় অনেকের।
বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের সবসময় পড়াশুনা নিয়ে থাকতে হয়, কিন্তু পড়ার সময় ঘুম আসার কারণে তারা ঠিকমতো পড়তে পারে না। পরীক্ষার সময় পড়ার চাপ একটু বেশি থাকে, তখন এই সমস্যা আরও বেশি দেখা দেয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে সারাদিনের প্লান করেও কোন কাজ হয় না, পড়তে বসলেই এসে যায় ঘুম। অথচ অন্য কোন কাজ করলে এমন সমস্যায় পড়তে হয় না।
শুধুমাত্র পড়তে বসলেই এমন টা কেন হয় কিংবা এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? সবাই এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে উঠে পড়ে লেগেছে। কেউ কেউ ডাক্তারের শরণাপন্নও হয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
সুচীপত্র
- পড়তে বসলে ঘুম আসার কারণ কি?
- পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর কার্যকরী উপায়
- স্পষ্টভাবে আওয়াজ করে পড়ুন
- কঠিন পড়া দিনে এবং সহজ পড়া রাতে পড়ুন
- পড়ার পাশাপাশি খাতায় লিখার অভ্যাস করুন
- গ্রুপ করে পড়ুন
- পড়ার ঘরকে রাখুন আলোকিত
- চেয়ারে বসে পড়ার অভ্যাস করুন
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন
- ভারি খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন
- পড়ার মাঝে নিয়মিত বিরতি নিন
- হালকা শরীর চর্চা করুন
- হেঁটে হেঁটে পড়ুন
- ভোরে উঠে পড়ার অভ্যাস করুন
- চা কিংবা কফি পান করুন
পড়তে বসলে ঘুম আসার কারণ কি?
আমরা ধারণা করে থাকি যে, পড়াশুনায় মনোযোগ না থাকলে এমনটা হতে পারে। আসলে ব্যাপারটা এমন না। গবেষকরা বের করেছেন ভিন্ন কারণ। মানুষ যখন বই পড়তে বসে তখন চোখকে বইয়ের পাতায় রাখতে হয়, একদিকে অনেকক্ষণ চেয়ে থাকতে হয়।সারাক্ষন চোখকে শুধু বাম দিক থেকে ডান দিকে নাড়াতে হয় বা ঘোড়াতে হয়।
শুধু কি দেখাদেখিতেই শেষ? না, গবেষকরা জানিয়েছেন, মানুষ যখন কোন কিছু পড়ে তখন মস্তিষ্ককে অনেক কাজ করতে হয়, যেমন, অর্থবোধক অনুচ্ছেদ, বাক্য, কিংবা অর্থবোধক শব্দ তৈরি করে রাখতে হয়। কোন পড়ায় কি বুঝানো হয়েছে, কোন শব্দের অর্থ কি? এসব ও অনুধাবন করতে হয় মস্তিষ্ককে। শুধু তাই নয়, চোখ যা পড়ছে তা ভবিষ্যতে মনে রাখতে হবে এমন চ্যালেঞ্জও নিয়ে থাকে মস্তিস্ক।
পড়ার সময় চোখের অনবরত নড়াচড়ার কারণে চোখের পেশী অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এতগুলো কাজ একসাথে মস্তিষ্ককে করতে হয় বলে খুব তারাতারি ক্লান্ত হয়ে যায় মস্তিষ্ক। এমতাবস্থায় মস্তিষ্ক এবং চোখ দুজনেরই বিশ্রামের প্রয়োজন পড়ে। আর বিশ্রামের সর্বোত্তম পন্থা তো ঘুম। তাই পড়ার সময় চোখে ধীরে ধীরে ঘুম চলে আসে।
আবার অনেক সময় আমরা আরামদায়ক স্থানে বসে বই পড়ে থাকি। কেউ কেউ শুয়ে শুয়ে, কেউ আবার নরম তুলতুলে চেয়ারে বসে, কেউ আবার শরীর হেলান দিয়ে বই পড়ে থাকে। হয়তো আরামে বসে পড়লে পড়া তারাতারি হবে বলে তারা মনে করে থাকে। কিন্তু বিষয়টা পুরোটাই উল্টো।
আপনি যখন আপনার শরীরকে আরামে রাখবেন তখন আপনার ব্রেইন মনে করবে এখন সময় বিশ্রামের তাই সে ঘুমের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। তাই পড়ার সময় অনেক ক্লান্তিবোধ হয় এবং চোখে ঘুম চলে আসে। এই ঘুম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আপনার ক্যারিয়ারের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি ক্যারিয়ারটাই ধংশ হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি আছে? হ্যাঁ অবশ্যই আছে।আসুন জেনে নেই পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর কার্যকরী কিছু উপায়।
পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর কার্যকরী উপায়
স্পষ্টভাবে আওয়াজ করে পড়ুন
ছোটবেলায় আব্বু আম্মু আমাদের বলতো এই জোরে আওয়াজ করে পড়বি যেন আমি শুনতে পাই। মা বাবার ভয়ে আমরা জোরে জোরে আওয়াজ করে পড়তাম আর ওনাদেরকে শুনাইতাম। কিন্তু এখন তো বড় হয়েছি, মা বাবা ওভাবে আর বলে না, তাই আর জোরে জোরে আওয়াজ করে পড়া হয় না। আমরা অনেকেই জোরে জোরে পড়াটাকে বাচ্চাদের কাজ মনে করে থাকি।
অনেকেই আবার মনে করে আমি তো মেস এ থাকি, এবং আমি অনার্স এ পড়ি, এই বয়সে এসে যদি জোরে জোরে পড়াশুনা করি তাহলে অন্যরা কি ভাববে। কিন্তু আপনি জানেন কি! জোরে জোরে আওয়াজ করে পড়াশুনা করলে ঘুম আসার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়? আওয়াজ করে পড়াশুনা করলে নিজের পড়া নিজেই শুনা। একসাথে দুই কাজ হয়ে যায়, পড়াও হয় আবার শোনাও হয়। তাই হয়তো নাম হয়েছে পড়াশুনা। শুধু পড়লেই হবে না পড়ার সাথে সাথে শুনতেও হবে। এতে করে খুব তারাতারি আপনার পড়া মুখস্ত হয়ে যাবে।
কঠিন পড়া দিনে এবং সহজ পড়া রাতে পড়ুন
দিনকে সৃষ্টি করা হয়েছে কাজের জন্য এবং রাতকে সৃষ্টি করা হয়েছে বিশ্রামের জন্য। তাই আমরা সারাদিন ধরে কাজ করে থাকি, এ কারণে ব্রেইন এবং শরীর অনেক ক্লান্ত থাকে। ক্লান্ত অবস্থায় যদি জটিল জটিল পড়া গুলো পড়তে বসি তবে তা সহজে বোধগম্য হবে না, সহজে বুঝা যাবে না। অনেক সময় পড়াশুনার প্রতি বিরক্তি চলে আসতে পারে।
তাই রাতের বেলা কঠিন বিষয়গুলো না পড়ে সহজ বিষয়গুলো পড়া উচিৎ এবং তারাতারি ঘুমাতে যাওয়া যাওয়া উচিৎ। ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে যদি কঠিন বিষয়গুলো পড়া হয় তবে খুব তারাতারি বোধগম্য হবে, এবং অল্প সময়ে মুখস্ত হয়ে যাবে।
পড়ার পাশাপাশি খাতায় লিখার অভ্যাস করুন
ছোটবেলা থেকেই আমরা একটি পড়া মুখস্ত করে ফেললে সেটি না দেখে খাতায় লিখতাম। বর্তমানে আমরা তা করি না। পড়ার পাশা পাশি লেখা অর্থাৎ যে পড়াটি মুখস্ত করব তার পর সেই পড়াটি খাতায় লিখব, অথবা কোন পড়া নিজের ভাষায় নোট করবো এতে করে পড়ালেখায় একটা বৈচিত্র্য চলে আসবে এবং ঐ পড়া মেমোরিতে অনেকদিন থাকবে। যদি লিখেতে না চান তবে বইয়ে দাগ দিয়ে পড়ার অভ্যাস করুন, দাগানোর জন্য বিভিন্ন রংয়ের কলম ব্যবহার করতে পারেন।
একঘিয়েমি পড়লে ঘুমিয়ে পড়ার যে সম্ভাবনা থাকে সে জন্য এসব কাজ করলে ঘুমিয়ে পড়ার সম্ভাবনা কমে যায়। লেখালাখি এবং বিভিন্ন রংয়ের কালির ব্যবহার ব্রেইনকে উদ্দীপ্ত বা জাগিয়ে রাখতে সহায়তা করে।
গ্রুপ করে পড়ুন
কিছুক্ষণ একা একা একটি বদ্ধ ঘরে পড়াশুনা করলে একঘেয়ে মনে হতে পারে অনেকের কাছে। তাছাড়া যখন পরীক্ষার চাপ থাকে তখন অনেকক্ষণ পড়াশুনা করতে হয়। ঐ সময়টাতে অনেকের কাছে অনেক দুর্বিষহ মনে হতে পারে। আবার যখন একা পড়াশুনা করলে যদি কোন বিষয় না বুঝা যায় তখন পড়াশুনার আগ্রহটাও নষ্ট হয়ে যায়। ঠিক তখনই মনে হয় পরে পড়ব এখন থাক। এখন বরং একটু ঘুমিয়ে নেই।
এই একঘিয়েমি দূর করার জন্য একসাথে কয়েকজন বন্ধু মিলে পড়াশুনা করা যেতে পারে। এতে করে জটিল জটিল বিষয়গুলো নিয়েও একে অপরের সাথে আলোচনা করে সমাধান বের করা যেতে পারে। এছাড়াও পুরো পড়ার সময়টাই বিনোদনমূলক মনে হবে। রাতে কিংবা দিনে এমন পরিবেশে পড়াশুনা করলে ঘুম তো আসবে বরং পড়াশুনাটা হবে পারফেক্ট।
পড়ার ঘরকে রাখুন আলোকিত
ঘর অন্ধকার রেখে টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে পড়াশুনা করার অভ্যাস অনেকেরই আছে, তবে তারা রাতের বেলায় বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারে না। কিছুক্ষণ হয়তো পড়তে পারে তারপর ঘুমের ডাকে সারা দিয়ে বিছানায় চলে যায়। মনে রাখবেন আপনি যখন টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে পড়াশুনা করবেন তখন টেবিল ব্যতীত পুরো ঘরটাই অন্ধকারে থাকবে যার কারণে আপনার ঘুম আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
কেননা অন্ধকার মানুষের শরীরে একটি হরমোন নিঃসরণ করে আর ঘুম এনে দেয়াই হচ্ছে এই হরমোনের প্রধান কাজ। তাই রাতের বেলায় পুরো ঘর আলোকিত রেখে পড়াশুনা করলে চোখে ঘুম আসার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।
চেয়ারে বসে পড়ার অভ্যাস করুন
আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যাদের বিছায় শুয়ে শুয়ে পড়তে পছন্দ করে, কিন্তু কিছুক্ষণ পড়ার পর সে যে কখন ঘুমিয়ে পড়ে সে নিজেও জানে না। চেয়ারে বসে পড়াশুনা করার সময় চোখে ঘুম চলে আসলে একটু হলে ঘুম নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিন্তু যদি বিছায় শুয়ে শুয়ে পড়তে পড়তে যদি ঘুম চলে আসে তবে সেই ঘুম কন্ট্রোল করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।
অনেক সময় পড়াশুনা দীর্ঘ সময় ধরে করতে হয়, ঐ সময়টা চেয়ারে বসে পড়া উচিৎ। চেয়ারে বসে এবং সামনে টেবিলের উপর বই রেখে পড়লে আপনার মনোযোগের সমস্যা হবে না। চেয়ারে বসে পড়তে পড়তে যখন ঘুম ঘুম ভাব চলে আসবে তখন হাত পা একটু নাড়ানাড়ি করে স্নায়ু কে সচল করে নিতে হবে।
প্রয়োজনে ৩০ মিনিট পরপর ৪-৫ মিনিটের ছোট একটি বিরতি নিতে পারেন, এই সময়টাকে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এভাবে আপনি রাতের বেলা দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশুনা করতে পারবেন।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন
বেশি বেশি পানি পান করার অনেক স্বাস্থ্যগত উপকারীতা রয়েছে এ ব্যাপারে আমরা কমবেশি সবাই জানি। কিন্তু আপনি জানেন কি! বেশি বেশি পানি পান করলে পড়াশুনার জন্যও উপকার আছে? হ্যাঁ তাই, পানি কম পান করলে আপনার মস্তিষ্কের আদ্রতা কমে যেতে পারে ফলে আপনি সহজে কোন পড়া বুঝতে এবং মনে রাখতে পারবেন না।
আবার আপনি যদি বেশি বেশি পানি পান করে থাকেন তবে আপনার মস্তিষ্কের কোষগুলো আদ্র এবং সতেজ থাকবে, ফলে খুব তারাতারি পড়া বুঝতে পারবেন এবং মনে রাখতে পারবেন। আর মস্তিষ্ক সতেজ থাকলে পড়াশুনায় আগ্রহ বেড়ে যায়, তখন ঘুম আসার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
ভারি খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন
যে কেউ ভারি খাবার কিংবা পেট পুরে খাবার খেলে অলসবোধ করে থাকে। এমনকি চোখে ঘুম চলে আসে। তাই অনেকে পেট পুরে খাওয়ার পর বিছানায় শুয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় আপনি পড়াশুনায় মনোযোগ দিতে পারবেন না। আবার আপনি যদি হালকা কিছু খাবার গ্রহণ করেন তবে অলসবোধ হবে না, বিছানায় শুয়ে পড়ার ইচ্ছে হবে না ফলে চোখেও ঘুম আসরে না।
অনেক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, খালি পেটে পড়াশুনা ভালো হয়। তাই বলে আপনি একেবারেই খালি পেটে থাকবেন না, কারণ একেবারে খালি পেটে থাকলে পড়ার সময় শুধু খাওয়ার কথা মাথায় ঘুরবে। এজন্য হালকা কিছু খেয়ে বা অর্ধেক পেট খালি রেখে পড়াশুনা করলে পড়া ভালো হয় এবং চোখে ঘুম আসবে না।
পড়ার মাঝে নিয়মিত বিরতি নিন
একটানা অনেকক্ষণ পড়াশুনা করা ঠিক না কারণ, এতে ব্রেইনের উপর মারাত্মক চাপ পড়তে পারে। ফলে একটা সময় পর মাথায় আর পড়া ঢুকতে চায় না। তাই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে একটু বিশ্রাম নেয়া দরকার। যদি পড়ার ফাঁকে একটু করে বিশ্রাম কিংবা ১০ থেকে ১৫ মিনিট ঘুমিয়ে নেন তবে আপনার ব্রেইন এ নতুন করে শক্তি পাবে। ফলে খুব তারাতারি পড়া বুঝতে এবং মনে রাখতে পারবেন। এই কাজটিকে পাওয়ার ন্যাপ বলা হয়ে থাকে। নিয়মিত পাওয়ার ন্যাপ গ্রহণ করলে আপনি সহজেই এবং কোন প্রকার বাধা ছাড়াই পড়াশুনায় খুব ভালো মনোযোগ দিতে পারবেন।
প্রতি ২ ঘণ্টা পর পর পাওয়ার ন্যাপ গ্রহন করা যেতে পারে। অপরদিকে যদি একটানা পড়াশুনা করেন তবে ব্রেইন অনেক প্রেশারে থাকবে, পড়ায় মনোযোগ কমে যাবে, পড়া সহজে মাথায় ঢুকবে না। এছাড়াও কয়েকদিন একটানা পড়াশুনা করলে শরীরে অনেক খারাপ প্রভাবও পড়তে পারে।
হালকা শরীর চর্চা করুন
একটানা এক স্থানে বসে পড়তে পড়তে একটা সময় অলসবোধ হবেই, ঠিক তখনই চোখে ঘুম আসতে শুরু করবে। আর এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। তাই যখন অলসবোধ হবে সাথে সাথে পড়া বন্ধ করে ৫ মিনিটের জন্য একটু হাঁটাহাঁটি করে নিন, হালকা ব্যায়াম করেও নিতে পারেন। এর ফলে আপনার অলসতা দূর হয়ে যাবে এবং চোখেও ঘুম আসবে না।
হেঁটে হেঁটে পড়ুন
বসে বসে পড়াশুনা করার চেয়ে হেঁটে হেঁটে পড়াশুনার ফলাফল বেশি এমন একটি তথ্য উঠে এসেছে একটি গবেষণায়। রাতে বেশিক্ষণ জেগে থেকে পড়ার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে হেঁটে হেঁটে পড়া। এতে করে অলসতাও আসবে না চোখেও ঘুম আসবে না।
ভোরে উঠে পড়ার অভ্যাস করুন
ছোটবেলায় আমরা পড়েছি “Early to bed and early to rise, makes a man healthy, wealthy, and wise” অর্থাৎ তারাতারি বিছানায় যাওয়া এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠা, একজন মানুষকে সুস্থ, জ্ঞানী এবং ধনী করে তোলে। এর মত পরম সত্য কথা আর হতে পারে না।
একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, রাত ১০ টা থেকে রাত ২ টা থেকে পর্যন্ত ঘুম শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি দরকারি। গবেষকরা বলেছেন অন্যান্য সময়ের ৪ ঘণ্টা ঘুম আর এই সময়ের ১ ঘণ্টা ঘুমের সমান কাজ করে।
আমরা জানি যে, পর্যাপ্ত ঘুম ব্রেইনকে সবসময় ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে। ব্রেইন ঠাণ্ডা থাকলে যে কোন কাজে আগ্রহ বেড়ে যায় এবং পাশাপাশি পড়াশুনায় মনোযোগ বেড়ে যায় বহুগুণ।
ব্রেইন সবচেয়ে বেশি ফ্রেশ থাকে ভোর বেলায়, তাই ভোর বেলায় যদি পড়াশুনা করা যায় সেই পড়া খুব সহজেই মনে রাখা সম্ভব হবে। আর রাতের বেলায় যথেষ্ট ঘুম হলে সারাদিনে শরীর, মন দুটোই থাকবে তরতাজা ফলে কাজ কিংবা পড়াশুনার সময় অলসবোধ হবে না এবং ঘুমও আসবে না।
চা কিংবা কফি পান করুন
অনেকেই বলে থাকেন, পড়ার সময় পড়া এবং খাওয়ার সময় খাওয়া। তবে অনেক ক্ষেত্রে পড়ার সময় খাওয়া বা পান করাটাও উপকারে আসতে পারে। ধরুন আগামীকাল আপনার পরীক্ষা, আপনি এখনও পড়া শেষ করতে পারেননি, এমতাবস্থায় আপনার একটি রাত জেগে পড়তে হবে।
পড়তে বসলেন কিন্তু কিসের পড়া কিসের কি! বার বার আপনার হাই আসতেছে, যেকোনো সময় আপনার চোখে ঘুম চলে আসবে, তখন পড়াশুনা বাদ দিয়ে আপনার বিছানার দিকে যেতে ইচ্ছে করবে। এমন অবস্থা কাটিয়ে উঠতে যদি এক কাপ চা কিংবা এক কাপ কফি পান করেন তবে সাথে সাথে হাই আসা বন্ধ হয়ে যাবে এবং চোখ থেকে ঘুম চলে যাবে।
তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত মাত্রায় চা অথবা কফি পান করা উচিৎ নয়। চা ও কফির বিকল্প হিসেবে চুইংগাম চিবাতে পারেন।