স্বামী এবং স্ত্রী এ দুটি মহান আল্লাহ তায়ালার একটি মহা মূল্যবান নেয়ামাত। বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে একজন পুরুষ তার স্ত্রী পায় এবং একজন নারী তার স্বামী পায়। একবার চিন্তা করে দেখেছেন, সমাজে বিবাহ না থাকলে কি অরাজকতাটাই না হতো।
ইসলামে স্বামী এবং স্ত্রী, একে অপরের প্রতি রয়েছে কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য। আজকে আমরা স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। আসুন জেনে নেই স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য কি?
সুচীপত্র
- স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কর্তব্য
- ১. স্বামীকে সন্তুষ্ট করা
- ২. স্বামীকে কষ্ট দেয়া যাবে না
- ৩. স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা
- ৪. অকারণে তালাক চাওয়া
- ৫. অবৈধ কাজে স্বামীর আনুগত্য না করা
- ৬. স্বামীর অনুমতি ব্যতীত নফল রোজা না রাখা
- ৭. স্বামীর ডাকে সারা দেয়া
- ৮. স্বামীর গোপনীয়তা প্রকাশ না করা
- ৯. স্বামীর ঘর ব্যতীত অন্য কারো ঘরে বিবস্ত্র না হওয়া
- ১০. স্বামীর অনুমতি ছাড়া পর পুরুষকে ঘরে ঢুকতে না দেয়া
- ১১. স্বামীর মতামত ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া
স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কর্তব্য
স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অনেকগুলো দায়িত্ব এবং কর্তব্য রয়েছে। কোন নারী যদি তার এ দায়িত্ব পালন না করে কিংবা অবহেলা করে তবে মহান আল্লাহ তায়ালা সেই নারীর প্রতি অসন্তুষ্ট হন এবং রাগান্বিতও হন। আসুন জেনে নেই, কুরআন এবং হাদিসের আলোকে একজন স্বামীর প্রতি একজন স্ত্রীর কি কি দায়িত্ব এবং কর্তব্য থাকতে পারে?
১. স্বামীকে সন্তুষ্ট করা
স্বামীকে সন্তুষ্ট করা অর্থাৎ স্বামীকে অসন্তুষ্ট রাখা যাবে না। আমাদের সমাজে অনেক নারী আছে যারা তাদের স্বামীকে মুল্যায়ন করে না, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে, বিভিন্নভাবে স্বামীর মনে কষ্ট দিয়ে থাকে। যে সংসারে নারী তার স্বামীকে মূল্যায়ন করে না সে সংসার কখনো সুখের হয় না।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন, দুনিয়াতে ৩ জন ব্যক্তির নামাজ আল্লাহর কাছে পৌঁছানো তো দূরের কথা তাদের মাথার উপরে উঠে না।
-
- যে নারী তার স্বামীকে রাগান্বিত অবস্থায় রাত যাপন করে, সে নারীর নামাজ আল্লাহর কাছে কবুল হয় না।
- কোন গোলাম যদি পালিয়ে যায় এবং সে যদি নামাজ আদায় করে তবে তার নামাজ আল্লাহর কাছে কবুল হয় না, যতক্ষণ না সে গোলাম তার মনিবের নিকট ফিরে আসে।
- এমন আমির বা নেতা যার কর্মীরা তার উপর অসন্তুষ্ট। এমন আমির বা নেতার নামাজ মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল হয় না।
তাই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে অবশ্যই প্রত্যেক নারীকে তার স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে হবে।
২. স্বামীকে কষ্ট দেয়া যাবে না
ইমাম আহমদ এবং অসংখ্য মুহাদ্দিসগণ বর্ণনা করেন যে,
“যে নারী দুনিয়াতে তার স্বামীকে কষ্ট দেয়, বেহেশতের হুরগণ সে নারীকে অভিশাপ দিতে থাকেন এবং সে নারীকে বলতে থাকেন, তাকে কষ্ট দিও না, মহান আল্লাহ তায়ালা তোমাকে ধংশ করুক, সে তো তোমার কাছে মাত্র কয়েকদিনের জন্য রয়েছে এবং খুব তারাতারি সে তোমাকে ছেড়ে দিয়ে আমাদের নিকটে চলে আসবে।”
৩. স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা
প্রতিটি নারীর উচিৎ তার স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা অর্থাৎ স্বামীর অকৃতজ্ঞ না হওয়া।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন,
“যে নারী তার স্বীয় স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না, সে নারীর দিকে মহান আল্লাহ তায়ালা সুদৃষ্টি দেবেন না। অথচ নারী তার স্বামী ব্যতীত স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।”
ইমাম মুসলিম বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন,
“আমি কয়েকবার জাহান্নাম পরিদর্শন করেছি, কিন্তু আজকের মতো ভয়াবহ এবং ভয়ানক দৃশ্য আর কোথাও দেখিনি। তার মধ্যে নারীর সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। উপস্থিত সাহাবীগণ বললেন হে আল্লাহর রাসুল কেন? তখন রাসুল (সাঃ) বললেন তাদের অকৃতজ্ঞতার কারণে। তখন সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, তারা কি মহান আল্লাহ তায়ালার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না? তখন রাসুল (সাঃ) বললেন, না, তারা তাদের স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না। তুমি যদি বছর বছর কারো সাথে ভালো ব্যবহার কর এবং যদি কোনোদিন তার বাসনা তোমার কাছ থেকে পূর্ণ না হলে সে বলবে যে, আজ পর্যন্ত তোমার কাছ থেকে কিছুই পেলাম না।”
৪. অকারণে তালাক চাওয়া
আমাদের আজকের দিনে সাংসারিক একটু কিছু হলেই স্বামীর কাছে ডিভোর্স বা তালাক চেয়ে থাকে। এভাবে অকারণে কথায় কথায় তালাক চাওয়া মহিলাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
ইমাম আবু দাউদ এবং ইমাম তিরমিজি (র) হযরত সওবান (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন,
“যে নারী কথায় কথায় কোন কারণ ছাড়া তার স্বামীর কাছে তালাক বা ডিভোর্স প্রার্থনা করে, সে মহিলার কাছে জান্নাতের সুঘ্রাণ হারাম হয়ে যাবে।”
৫. অবৈধ কাজে স্বামীর আনুগত্য না করা
আমাদের সমাজে অনেক স্বামী আছে তারা স্ত্রীকে দিয়ে অবৈধ কাজ করায় কিংবা অবৈধ কাজ করাতে বাধ্য করায়। এমন স্বামীর আনুগত্য করা জায়েজ নেই।
এ ব্যাপারে মাহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন,
“আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষের আনুগত্য করা যাবে না।”
যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে আল্লাহর সাথে শিরক করতে বলে তবে এ ব্যাপারে স্বামীর আনুগত্য করা যাবে না। এক কথায় স্বামী তার স্ত্রীকে কোন কবিরাহ গুনাহ করতে বললে তা করা যাবে না।
৬. স্বামীর অনুমতি ব্যতীত নফল রোজা না রাখা
হযরত আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণীত, শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন,
“স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় কোন নারী তার স্বামীর অনুমতি ব্যতীত নফল রোজা রাখবে না।”
যেহেতু কোন কোন ক্ষেত্রে স্ত্রীর নফল রোজা রাখার কারণে স্বামী প্রাপ্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারে, যা গোনাহের কারণ হতে পারে।
৭. স্বামীর ডাকে সারা দেয়া
আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন,
“কোন স্ত্রীকে যদি তার স্বামী তার নিজের বিছানায় ডাকে এবং স্ত্রী যদি তার স্বামীর ডাকে সাড়া না দেয় এবং স্বামী অসন্তুষ্ট অবস্থায় নিদ্রা যাপন করে তবে সকাল না হওয়া পর্যন্ত ফেরেশতাগণ সে মহিলাকে অভিশাপ দিতে থাকে।”
৮. স্বামীর গোপনীয়তা প্রকাশ না করা
হযরত আসমা বিনতে ইয়াজিদ (রাঃ) হতে বর্ণীত, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন,
“কিছু স্বামী আছে যারা তার স্ত্রীর গোপন আচরণের কথা অন্যের কাছে বলে বেড়ায় ঠিক তেমনি কিছু স্ত্রী আছে যারা তার নিজের স্বামীর গোপন কথা বা আচরণগুলো অন্যের কাছে বলে বেড়ায়। এ কথা শুনে উপস্থিত সাহাবীগণ চুপ হয়ে গেলেন, এবং কেউ কোন ধরণের কোন শব্দ করলেন না। তখন আমি বললাম হে রাসূল (সাঃ) স্বামী স্ত্রীরা সাধারণত এমনটা করে থাকে। তখন রাসূল (সাঃ) বলেন এমন কাজ কখনোই কর না। কারণ এটা তো শয়তানের কাজ, যে রাস্তার মধ্যে নারী শয়তানকে আলিঙ্গন করার মতো, আর যখন আলিঙ্গন করে তখন রাস্তার লোকজন তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে।”
৯. স্বামীর ঘর ব্যতীত অন্য কারো ঘরে বিবস্ত্র না হওয়া
আমাদের সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন,
“মহান আল্লাহ তায়ালা ঐ সকল নারীর গোপনীয়তা নষ্ট করে দেবেন যারা স্বামীর ঘর ব্যতীত অন্য কোথাও বিবস্ত্র হয়।”
সুতরাং প্রত্যেক নারীর উচিৎ হবে সে যেন স্বামীর ঘর ছাড়া অন্য কোথাও বিবস্ত্র না হয়। এতে তার গোপনীয়তা প্রকাশ পেতে পারে।
১০. স্বামীর অনুমতি ছাড়া পর পুরুষকে ঘরে ঢুকতে না দেয়া
হযরত আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণীত তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন,
“কোন নারী তার স্বামীর অনুমতি ব্যতীত অন্য কাউকে তার ঘরে ঢুকতে দেবে না।”
১১. স্বামীর মতামত ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া
এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
“তোমরা ঘরের মধ্যে অবস্থান কর।”
স্বামী যদি জীবিত থাকে তবে তার অনুমতি ছাড়া কোথাও যাওয়া যাবে না। কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হলে অবশ্যই স্বামীর অনুমতি নিয়েই যেতে হবে।
আরও পড়ুন,
hey there and thank you for your info – I’ve certainly picked
up anything new from right here. I did however expertise several technical points using this website, since I experienced to reload the
web site lots of times previous to I could get it to load
properly. I had been wondering if your web hosting is OK?
Not that I’m complaining, but slow loading instances times will sometimes affect your placement in google and could damage
your high-quality score if ads and marketing with Adwords.
Well I am adding this RSS to my e-mail and can look out for much more of your respective exciting content.
Ensure that you update this again very soon.