Download Free FREE High-quality Joomla! Designs • Premium Joomla 3 Templates BIGtheme.net
Home » ইসলামের আলো » স্ত্রী অবাধ্য হলে স্বামীর করণীয় কি? ইসলাম কি বলে?

স্ত্রী অবাধ্য হলে স্বামীর করণীয় কি? ইসলাম কি বলে?

দাম্পত্য জীবন সুখময় করতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিল মহব্বত বা ভালোবাসার কমতি রাখা একেবারেই অনুচিত। বলা যেতে পারে সুখী দাম্পত্য জীবনের পূর্বশর্ত হচ্ছে ভালোবাসা বা মিল।

আমাদের দেশে অধিকাংশ পরিবারে গ্রাস করেছে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলহ। অনেক ক্ষেত্রে স্বামীর জন্য দাম্পত্য জীবনে কলহ হতে পারে আবার অনেক ক্ষেত্রে স্ত্রীর জন্যও কলহ হতে পারে।

আজ আমরা জানবো স্ত্রী অবাধ্য হলে স্বামীর করণীয় কি? আর এক্ষেত্রে ইসলাম কি বলে?

আমরা মুসলমান হিসেবে বিশ্বাস করি ইসলাম আমাদের একমাত্র জীবন বিধান। জীবন চলার পথে সবকিছুরই সমাধান আছে ইসলামে।

ঠিক তেমনি অবাধ্য স্ত্রীর ক্ষেত্রেও ইসলামের রয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা। আসুন জেনে নেই, স্ত্রী অবাধ্য হলে ইসলামের আলোকে স্বামীর করণীয়।

স্ত্রী অবাধ্য হলে স্বামীর করণীয়

স্ত্রী অবাধ্য হলে স্বামীর করণীয়

অবাধ্য স্ত্রীকে বাধ্য করতে বা বশে আনতে অর্থাৎ সংশোধন করতে স্বামীর করণীয় সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন,

“আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর, তাদের সৎ উপদেশ দাও, তাদের সাথে শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয় তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা সবার উপরে শ্রেষ্ঠ” (সূরা নিসা, আয়াত ৩৪)

অবাধ্য স্ত্রীকে সংশোধন করতে উপরোক্ত আয়াতে চারটি পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। আসুন জেনে নেই, চারটি পদক্ষেপের বিস্তারিত আলোচনা।

আরও পড়ুন, রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

১. সৎ উপদেশ দেয়া

স্ত্রী অবাধ্য হলে আমাদের অনেকেই খুব তারাতারি রেগে যান বা উত্তেজিত হয়ে যান। এমন কি কেউ কেউ প্রচুর প্রহারও করে থাকেন। কিন্তু এমনটি করা একেবারেই অনুচিত।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কি উচিৎ? উচিৎ তো এটাই যা মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন। স্ত্রী অবাধ্য হলে সরাসরি রেগে না গিয়ে ধৈর্য ধারন করে স্ত্রীকে সৎ উপদেশ দেয়া এবং মিষ্টি ভাষায় ভালোবেসে বোঝানোর চেষ্টা করা।

আমরা যেহেতু মানুষ, আর মানুষ ভুল করবে এটাই স্বাভাবিক। ভুল ত্রুটি জীবনেরই অংশ তাই স্ত্রীর কোন ভুল কাজ যদি আপনার চোখে পড়ে তবে স্বামীর উচিৎ স্ত্রীর ভুলগুলো বুদ্ধিমত্তার সাথে ধরিয়ে দেয়া।

স্ত্রী যদি অন্যায় করে প্রথমদিকে তার অন্যায়গুলোকে ক্ষমা করে দেয়া এবং মায়া মমতা এবং ভালোবাসার মাধ্যমে স্ত্রীকে যতদুর সম্ভব সংশোধনের চেষ্টা করা।

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, এভাবে সংশোধনের চেষ্টা করেও কোন কাজ না হলে কি করণীয়? অবশ্যই করণীয় আছে। তখন আপনাকে যেতে হবে দ্বিতীয় পদক্ষেপে।

আসুন তাহলে জেনে নেই, স্ত্রী অবাধ্য হলে দ্বিতীয় পদক্ষেপে স্বামীর করণীয় কি?

২. স্ত্রীর সাথে শয্যা ত্যাগ করা

উপদেশ দেয়ার পরেও যদি স্ত্রী অবাধ্য থেকে যায় এবং আচরনে কোন রূপ পরিবর্তন দেখা না যায় তবে স্বামীর কাজ হবে স্ত্রীর সাথে একই বিছানায় না ঘুমানো। অর্থাৎ শয্যা ত্যাগ করা।

শুধু শয্যা ত্যাগ করলেই হবে না, তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থগিত করতে হবে। স্ত্রীর হাতের রান্না করা খাবার না খাওয়া কিংবা কথা না বলা ইত্যাদিও করা যেতে পারে।

এতে যদি অবাধ্য স্ত্রী সতর্ক হয়ে যায় এবং সংশোধন করে নেয় নিজেকে তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি এতেও অবাধ্য স্ত্রী তার আচরণ সংশোধন না করে তবে আপনাকে অবলম্বন করতে হবে তৃতীয় ধাপ।

আসুন জেনে নেই, স্ত্রী অবাধ্য হলে তৃতীয় পদক্ষেপে বা ধাপে স্বামীর করণীয় কি?

জেনে নিন, দোয়া কবুলের শর্তাবলী

৩. হালকা প্রহার করা

প্রথম ধাপ সৎ উপদেশ দেয়া এবং দ্বিতীয় ধাপ শয্যা ত্যাগ করা। এই দুই ধাপে যদি অবাধ্য স্ত্রী স্বামীর বাধ্যগত না হয় তবে পবিত্র কুরআন অনুসারে তৃতীয় ধাপ বা পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই তৃতীয় ধাপ হচ্ছে প্রহার করা। প্রহার করার অর্থ এই নয় যে আপনি আপনার স্ত্রীকে পিটিয়ে রক্ত বের করে দেবেন। তাহলে কীভাবে প্রহার করবেন?

হাদিসে এসেছে-

“এমন ভাবে প্রহার করো যেন শরীরে কোন প্রকার দাগের চিহ্ন না পড়ে, এবং জখম না হয় এবং মুখমন্ডল ও লজ্জাস্থানে কখনো প্রহার করবে না” (মুজামে তাবরানি)

এখানে মূলত হালকা প্রহার বা আঘাত করার কথা বলা হয়েছে। শরীরে যেন জখমের চিহ্ন না হয়, রক্তপাত যেন না হয়। পাশাপাশি লজ্জাস্থান এবং মুখমন্ডলে আঘাত করতে নিষেধ করা হয়েছে।

এতেও যদি কাজ না হয়, অর্থাৎ তৃতীয় ধাপের কাজ অনুসরণ করেও যদি স্ত্রী অবাধ্য থেকে যায় তবে স্বামীর করণীয় কি হবে?

আসুন তবে জেনে নেই, পবিত্র কুরআন অনুসারে অবাধ্য স্ত্রীকে বাধ্যগত করতে স্বামীর চতুর্থ পদক্ষেপ কি?

৪. সালিশ বসানো

এ ধরণের সালিশ এক পেশে হলে চলবে না। সালিশে স্ত্রী পক্ষের লোকও থাকবে এবং স্বামী পক্ষের লোকও থাকবে।

এক বা একাধিক সালিশ বসিয়ে আলোচনার মাধ্যমে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“যদি তোমরা উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশঙ্কা কর, তবে তার বংশ থেকে একজন সালিশ নিয়োগ কর। যদি তারা মীমাংসা কামনা করে,তবে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং সবার মনের কথা জানেন ।”  (সূরা নিসা, আয়াত নং ৩৫)

উপরোক্ত বিষয় বা আলোচনাগুলো পর্যালোচনা করলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, রাগের বশবর্তী হয়ে বা উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীর প্রতি অন্যায় আচরন করা যাবে না। কোন ধরণের অমানবিক আচরণ করা যাবে না।

মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করলে ইনশাআল্লাহ অবাধ্য স্ত্রী অবশ্যই স্বামীর বাধ্যগত হবেন। আর এভাবেই দাম্পত্য জীবন হয়ে উঠবে সুখময়।

মহান আল্লাহ তায়ালা সবাইকে কুরআন এবং হাদিস অনুসারে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। এটাই কামনা করছি। আমীন। [লেখাটি শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করে দিন]

আরও পড়ুন, 

Check Also

কোমল পানীয় কেন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? সফট ড্রিংকস এর অপকারিতা | Disadvantages of soft drinks

কোমল পানীয় কেন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? কোমল পানীয় বা সফট ড্রিংকস এর অপকারিতা

কোমল পানীয় বা সফট ড্রিংকস বলতে আমরা বুঝি ফানটা, কোকাকোলা, সেভেন আপ, পেপসি ইত্যাদি। ইংরেজিতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!