গাজর খাওয়ার উপকারিতা আলোচনা করার পূর্বে জেনে নিই গাজর সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য। গাজর একটি শীতকালীন সবজি হলেও সারা বছর ধরে বাজারে পাওয়া যায়।
গাজরকে বলা হয়ে থাকে সুপার ফুড। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের মানুষ গাঁজর খেয়ে থাকে।
সবচেয়ে বেশি গাজর উৎপাদন হয়ে থাকে চীনে। পৃথিবীতে যে পরিমাণ গাঁজর চাষ হয় তার প্রায় অর্ধেকেই হয় চীন দেশে।
আমাদের দেশে গাজর সালাদ হিসেবে বেশি খাওয়া হয়ে থাকে। কেউ কেউ রান্না করেও খায়।
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য উপাদান। এতে এতো পরিমাণ খাদ্য উপাদান রয়েছে অন্যান্য সব্জিতে এতোগুলো খাদ্য উপাদান একসাথে পাওয়া একেবারেই অসম্ভব।
আমরা অনেকেই গাজরের উপকারিতা সম্পর্কে কিছুই জানি না। না জানার কারণে অনেকে এই সব্জিকে তেমন গুরুত্ব দেয় না।
এই সব্জির যে কত গুণ তা জানলে আপনার চোখ কপালে উঠবে এবং প্রতিদিন একটি করে হলেও গাজর খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
আসুন প্রথমে জেনে নেই গাজরের মধ্যে কি কি উপাদান রয়েছে?
সুচীপত্র
- গাজরের গুনাগুণ/ গাজরের পুষ্টির পরিমাণ
- গাজর খাওয়ার উপকারিতা
- ১. দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে
- ২. ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়
- ৩. লিভারের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- ৪. অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে
- ৫. ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
- ৬. অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে
- ৭. হার্ট এর রোগ প্রতিরোধ করে / হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- ৮. দাঁত মজবুত করে
- ৯. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
- ১০. স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
- ১১. কানের ব্যথা কমায়
- ১৩. কৃমি ধংশ করে
- ১৪. ব্লাডের কোলেস্টেরল কমায়
- ১৫. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
- গাজরের অপকারিতা বা গাজর খাওয়ার অপকারিতা
গাজরের গুনাগুণ/ গাজরের পুষ্টির পরিমাণ
১) চিনি ৬ গ্রাম
২) ফ্যাট ০.২ গ্রাম
৩) কার্বোহাইড্রেট প্রায় ৯ গ্রাম
৪) ডায়েটারি ফাইবার ৩ গ্রাম
৫) ফসফরাস ৩৬ মি.গ্রাম
৬) ম্যাগনেসিয়াম ১৮ মি. গ্রাম
৭) ক্যালসিয়াম ৩৩ মি. গ্রাম
৮) সব ধরণের ভিটামিন বি ১১৩.৩১ মি. গ্রাম
৯) ভিটামিন সি ৭ মি. গ্রাম
এগুলো ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন এ।
গাজর খাওয়ার উপকারিতা
আপনি কি নিয়মিত ভিটামিন এ গ্রহণ করে থাকেন? যদি গ্রহণ করে থাকেন তবে আজকেই তা খাওয়া বাদ দিয়ে প্রতিদিন একটি করে গাজর খাওয়া শুরু করে দিন।
প্রতিদিন একটি করে গাঁজর খেলে আপনার শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব খুব অল্প সময়ের মধ্যে পূরণ হয়ে যাবে।
কারণ গাঁজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং অন্যান্য সব ভিটামিন যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
আসুন জেনে নেই গাজর খেলে কি উপকার পাওয়া যায়?
১. দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে
প্রাকৃতিক উপায়ে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে চান তবে আজ থেকেই নিয়মিত অন্তত একটি করে গাঁজর খাওয়া শুরু করে দিন। গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ যা দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
ভিটামিন এ আসে মূলত গাজরে থাকা বিটা ক্যারোটিন থেকে। গাজরের বিটা ক্যারোটিন আমাদের শরীরের লিভারে গিয়ে ভিটামিন এ তে কনভার্ট করে দেয়।
এই ভিটামিন এ চোখের রেটিনাতে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি নিয়মিত গাজর খেলে রাতের বেলায় ভালো দেখতে পাওয়া যায়।
রাতের অন্ধকারে ভালো দেখার জন্য এক ধরণের বেগুনী পিগমেন্ট কাজ করে থাকে।
নিয়মিত গাজর খেলে এই বেগুনী পিগমেন্ট এর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়।
এছাড়াও নিয়মিত গাজর খেলে রাতকানা রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায় এবং চোখকে বিভিন্ন রোগ বালাই হতে রক্ষা করে।
গাজরের গুনাগুণ গুলোর মধ্যে অন্যতম গুণ হচ্ছে এটি নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
জেনে নিন, যে ২৩ টি কারণে আপনার নিয়মিত টমেটো খাওয়া উচিৎ
২. ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়
ইঞ্জিন চালানোর জন্য যেমন তেলের প্রয়োজন হয় তেমনি আমাদের শরীরকে সচল রাখতে প্রয়োজন খাবার।
এই খাবার হজম হওয়ার পর মল ত্যাগ করার মাধ্যমে আমরা বের করে দেই কিন্তু কিছু খাবার পেটে রয়ে যায়।
এই রয়ে যাওয়া খাবারগুলোকে বলা হয় Free Radicals. এই Free Radicals গুলো শরীরের কোষ নষ্ট করে দিতে পারে।
এর ফলে ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং হতে পারে ক্যান্সারের মতো মরণ ব্যাধি।
গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে, যা শরীরের ভিতরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর কাজ করে থাকে।
এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট Free Radicals এর বিরুদ্ধে লড়াই করে Free Radicals গুলোকে ধংশ করে দেয়। যার ফলে শরীর থেকে ক্যান্সার কোষ ধীরে ধীরে কমে যায়।
এছাড়াও গাজরে রয়েছে Falcarindiol এবং Falcarinol নামক দুটি উপকারী উপাদান যা সরাসরি ক্যান্সার কোষগুলোর সাথে লড়াই করে তাদের ধংশ করে দেয়।
তাই ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে প্রতিদিন অন্তত ১টি অথবা ২টি গাঁজর খাওয়া উচিৎ। গাজরের উপকারিতা গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম একটি উপকারিতা।
৩. লিভারের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে
মানুষের শরীর থেকে জমিয়ে থাকা বিশাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করে গাজর। আর এই কাজটি করে মূলত গাঁজরে থাকা ভিটামিন এ।
এছাড়াও নিয়মিত গাজর খেলে পিত্তথলী ভালো থাকে এবং শরীরে জমে থাকা হিমায়িত ফ্যাট কমিয়ে আনে। এটি গাজর খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম।
গাজরে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ফাইবার আছে যা লিভারের কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং কোলনকে পুরোপুরি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে অর্থাৎ পায়খানার রাস্তা সবসময় ক্লিয়ার থাকে।
প্রতিদিন নিয়ম করে গাজর খেলে লিভারের প্রদাহ কমে যায়, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ইনফেকশনের ঝুঁকি কমে যায় এছাড়াও লিভার সিরোসিস, হেপাটাইটিস ও কোলেস্টিসিসের হাত থেকে লিভারকে রক্ষা করে গাজর।
জেনে নিন, মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে যা করা প্রয়োজন
৪. অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে
মানুষের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ কমে গেলে দেখা দিতে পারে নানা ধরণের শারীরিক সমস্যা, এমনকি বৃদ্ধি পেতে থাকে ক্যান্সার কোষ।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কমে যাওয়ার কারণে শরীরের ত্বকে বয়সের ছাপ চলে আসে।
অল্প বয়সে শরীরের চামড়া কুচকে যেতে থাকে। গাজরের মধ্যে থাকা ক্যারোটিনয়েড মূলত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কাজগুলো করে থাকে।
মানব শরীরকে বিষমুক্ত করতে অনন্য ভূমিকা পালন করতে পারে গাজর। তাই গাজরের উপকারিতার কথা মাথায় রেখে প্রতিদিন নিয়ম করে অন্তত একটি করে গাজর খাওয়া দরকার।
৫. ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
আমরা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য কতোকিছুই না করে থাকি, কেউ ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাই, কেউ বিভিন্ন কসমেটিক ব্যবহার করে থাকি।
কিন্তু হাতের নাগালে পাওয়া যায় এবং দামেও সস্তা এমন একটি সবজির গুণের কথা অনেকেই জানি না।
গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। গাজর খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে একটি হল ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
এছাড়াও গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে যা ব্রণের সমস্যা কমিয়ে দেয়, বয়সের ছাপ দূর করে, সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং সতেজ রাখতে প্রতিদিন গাজর খাওয়ার বিকল্প নেই।
জেনে নিন, কিভাবে কমলার খোসাকে রূপচর্চায় ব্যবহার করবেন?
৬. অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে
শরীরের কোন জায়গা কেটে গেলে আমরা অ্যান্টিসেপটিক লাগিয়ে দেই যেন ইনফেকশন না হয়।
অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করি ডেটল, Povidone Iodine, স্যাভ্লন ইত্যাদি।
কিন্তু আপনি কি জানেন! ইনফেকশন প্রতিরোধে গাজরের রস ব্যবহার করা যায়?
হ্যাঁ তাই, শরীরের কোন জায়গায় কেটে গেলে লাগিয়ে নিতে পারেন গাজরের রস, এতে করে ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকবে না।
এটি গাজরের উপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপকারিতা।
৭. হার্ট এর রোগ প্রতিরোধ করে / হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
আমরা জানি হার্ট সারা শরীরে ব্লাড সাপ্লাই করে থাকে। আর এই ব্লাডে মিশ্রিত থাকে অ্যামাইনো এসিড যা খাদ্য ভেঙ্গে গিয়ে তৈরি হয়।
ব্লাডের মাধ্যমে সারা শরীরে খাদ্য পৌছিয়ে দেয়ার কাজ করে থাকে হার্ট। এই হার্ট যদি অসুস্থ হয় তবে তো লাইফ শেষ।
হার্টকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত গাজর খাওয়া দরকার। কারণ গাজরের মধ্যে থাকা ক্যারোটিনয়েড নানা ধরণের অসুখের হাত থেকে হার্টকে রক্ষা করে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন প্রতিদিন অন্তত একটি করে গাজর খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি প্রায় ৬৮% পর্যন্ত কমে যায়। গাজরের এই উপকারিতার কারণে আপনার খাদ্যাভাসে অন্তত একটি গাজর রাখা উচিৎ।
পড়ে নিন, যে ৫ টি কারণে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যায়
৮. দাঁত মজবুত করে
দাঁত ও দাঁতের মাড়ি মজবুত করতে সহায়তা করে ভিটামিন সি। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে।
তাই নিয়মিত গাজর খেলে দাঁত এবং দাঁতের মাড়ি শক্ত ও মজবুত হয়। দাঁতের গোঁড়া বা মাড়ি থেকে রক্ত ঝরা রোধ করে। এটিও গাজরের উপকারিতা গুলোর মধ্যে একটি
৯. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
গাজর ক্ষারধর্মী হওয়ায় যখন গাজর খাওয়া হয় তখন মুখের ভিতরে লালার উৎপাদন বেড়ে যায় এবং মুখের ভিতরে এসিডের পরিমাণ তুলনামূলক বৃদ্ধি পায় ফলে মুখের ভিতরে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া ধংশ হয়।
ফলস্বরূপ মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় না। এছাড়াও নিয়মিত গাজর খাওয়ার উপকারিতা হচ্ছে মুখের অন্যান্য অসুখ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।
১০. স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
সারা পৃথিবীতে স্ট্রোক মারাত্মক আকার ধারন করেছে। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যারা নিয়মিত গাজর খান তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক গুণ কম।
তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে নিয়মিত গাজর খাওয়ার বিকল্প নেই। গবেষকরা জানিয়েছেন, গাজর খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে এটি প্রধান এবং উল্লেখযোগ্য।
জেনে রাখুন, ৫ ওয়াক্ত নামাজের শারীরিক এবং মানসিক উপকারিতা
১১. কানের ব্যথা কমায়
বিভিন্ন কারণে আমাদের কানে ব্যথা হতে পারে। কারো যদি সর্দি কাশি থাকে তবে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দিতে পারে কানের ব্যথা।
এই কানের ব্যথা দূর করতে প্রতিদিন গাজরের জুস খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। জুস না করতে পারলে কাঁচা গাজরও খেতে পারবেন।
গাজরের অনেক উপকারতা বা গাজরের গুনাগুণ গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম একটি গুণ।
১৩. কৃমি ধংশ করে
পেটের কৃমি হলে স্বাস্থ্য হানি হয়, খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে যায়, শরীরে রক্ত কমে যায়, শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যায়, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
কৃমি কর্মকাণ্ড থেকে পরিত্রান পেতে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন। এক্ষেত্রে গাজরের জুস খেতে পারবেন কিংবা কাঁচা গাজর খেলেও উপকার পাওয়া যাবে।
গাজর খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে এটি উল্লেখযোগ্য একটি উপকারিতা তাই আপনার খাদ্য তালিকায় এটি যুক্ত করা উচিৎ।
১৪. ব্লাডের কোলেস্টেরল কমায়
হাই ব্লাড প্রেসার রোগের নাম আমরা কম বেশি সবাই শুনেছি। বর্তমানে হাই ব্লাড প্রেসার মারাত্মক আকার ধারন করেছে।
প্রায় সবার বাড়িতে একজন করে হাই ব্লাড প্রেসারে ভুগা অন্তত একজন রোগী আছে।
ব্লাডে যদি কোলেস্টরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হাই ব্লাড প্রেসার হতে পারে। তাই ব্লাডের কোলেস্টরলের মত্রা নিয়ন্ত্রণ করা একান্ত জরুরী।
নিয়মিত গাজর খেলে ব্লাডে কোলেস্টরলের মত্রা কমে যায় এবং হাই ব্লাড প্রেসার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। গাজরের উপাকারিতা গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
জেনে রাখুন, যেসব খাবার খেলে রাতে ভালো ঘুম হয়
১৫. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
ডায়াবেটিস এর নাম আমরা কে না জানি। রক্তে যদি সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় তখন তাকে বলা হয় হাইপার গ্লাইসেমিয়া। এই অবস্থাকে আমরা ডায়াবেটিস বলে থাকি।
বলা যেতে পারে ব্লাডে সুগারের মাত্রা বেশি হওয়া মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। ব্লাডে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে থাকি।
ডাক্তার তখন আমাদের কিছু টেস্ট দিয়ে Anti Diabetes মেডিসিন লিখে দেয়। কিন্তু আপনার হাতের কাছে পাওয়া যায় গাজর। নিয়মিত গাঁজর খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
গাজরের উপকারিতা গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম একটি উপকারিতা তাই আজই আপনি আপনার খাবারের তালিকায় গাজর যোগ করে নিন।
মোট ১৫ টি উপকারের কথা আমরা এতক্ষণ জেনে নিলাম। আমাদের শরীর রোগমুক্ত থাকলে বা সুস্থ থাকলে সেটা আমাদের জন্য ভালো। একটু ভালো থাকার জন্য আমরা অনেক কিছুই করে থাকি।
খাবার দাবারে অনিয়ম করলে এবং সেটা অভ্যাসে পরিণত হলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা ধরণের জটিল জটিল রোগ। তাই আমাদের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আনা জরুরী।
একটি করে গাজর খাওয়ার কারণে যদি আমরা ভালো থাকতে পারি তবে কেন গাজরকে আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখব না?
গাজরের প্রায় ১৫টি উপকারের কথা আমরা বিস্তারিত জানলাম। আসুন এখন অল্প কিছু অপকারিতাও জেনে নেব।
আর কোন কোন অবস্থায় কিংবা কাদের গাজর খাওয়া যাবে না এটাও জানা অনেক জরুরী।
জেনে নিন, কি কারণে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে?
গাজরের অপকারিতা বা গাজর খাওয়ার অপকারিতা
অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। পরিমিত গাজর খাওয়া যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তেমনি অতিরিক্ত মাত্রায় গাজর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি।
আসুন বিস্তারিত জেনে নেই গাজর খাওয়ার অপকারিতা গুলো কি কি?
- আমরা আগেই জেনেছি যে, গাজরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন।এই বিটা ক্যারোটিন লিভারে গিয়ে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়ে শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব দূর করে। তবে যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন এ অর্থাৎ গাজর খান তাহলে আপনার ত্বকের রং পরিবর্তন হতে পারে।
- গাজর খেলে অ্যালার্জি দেখা দিলে গাজর খাওয়া যাবে না। অনেকের আবার একটি দুটি খেলে অ্যালার্জি দেখা দেয় না কিন্তু বেশি পরিমাণে খেলে অ্যালার্জি দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে কখনোই একটির বেশি গাজর খাওয়া যাবে না।
- অতিরিক্ত গাজর খেলে দাঁত ক্ষয় হয়ে যেতে পারে।
- প্রচুর পরিমাণে গাজর খেলে ত্বকের রং হলুদ হয়ে যেতে পারে, যা আপনি কখনো কামনা করেন না।
- আমরা জেনেছি পরিমিত মাত্রায় গাজর খেলে হজম শক্তি বেড়ে যায় কিন্তু বেশি পরিমাণে গাজর খেলে পেটের অসুখ যেমন, ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রিক, পেট ফুলা, ইত্যাদি হতে পারে।
- স্তন্যদানকারী মহিলা বেশি পরিমাণে গাজর খেলে তাদের বুকের দুধের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।
সবশেষে বলা যায়, মাত্রাতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। তাই বেশি পরিমাণে গাজর খেয়ে তার উপকারিতা নেয়ার বদলে শরীরের ক্ষতি ডেকে না আনাই ভালো।
গাজরের উপকারিতা পাওয়ার জন্য পরিমিত গাজর খেয়ে শরীরকে সুস্থ রাখার সুযোগ হাতছাড়া করা বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না।
আরও পড়ুন,
*লেখাটি ভালো লাগলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন*